dse lago curentশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট থাকায় ৩২ কোম্পানির শেয়ার দর ফেসভ্যালুর নিচে নেমে এসেছে। বাজার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও এসব শেয়ারের প্রতি আস্থা নেই বিনিয়োগকারীদের। যার ফলে বছরের পর বছর ফেসভ্যালুর ‍নিচে এসব কোম্পানির শেয়ারের দর অবস্থান করেছে।

গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে টানা ৭ কার্যদিবস সূচক বাড়লেও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩২ কোম্পানির শেয়ার দর ফেসভ্যালুর নিচে নেমে এসেছে। আর এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার কারণে এখন প্রতিনিয়ত ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে তারা। বাইব্যাক আইন বাস্তবায়ন করা হলে বিনিয়োগকারীদের এ ক্ষতির মুখে পড়তে হতো না বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাই বিনিয়োগকারী তথা পুঁজিবাজারের স্বার্থে  বাইব্যাক আইন প্রণয়ন করা উচিত বলে মনে করেন তারা।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ঈদ পূর্ববর্তী শেষ কার্যদিবস ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮ খাতের ৩২ কোম্পানির শেয়ার দর ফেস ভ্যালুর নিচে অবস্থান করছে। কোম্পানিগুলো হলো: ব্যাংক খাতের এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড। সিরামিক খাতের শাইনপুকুর সিরামিক। আর্থিক খাতের  বিআইএফসি, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, ফাস ফাইন্যান্স, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং,

প্রিমিয়ার লিজিং, প্রাইম ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স। খাদ্য ও আনুসাঙ্গিক খাতের ফাইন ফুড, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, মেঘনা পেট। কাগজ ও মুদ্রণ খাতের খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড। ওষুধ ও রসায়ন খাতের বেক্সিমকো সিনথেটিক। বস্ত্র খাতের সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইল, ঢাকা ডাইং, ডেল্টা স্পিনিং, দুলামিয়া কটন, ফ্যামিলি টেক্সটাইল,  জেনারেশন নেক্সট, ম্যাকসন্স স্পিনিং, মেট্রো স্পিনিং, সোনারগাঁ টেক্সটাইল লিমিটেড এবং ভ্রমণ ও অবকাস খাতের বিডি সার্ভিস ও ইউনাইটেড এয়ার লিমিটেড।

বাজার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার ৮ সেপ্টেম্বর ব্যাংক খাতের কোম্পানি এক্সিম ব্যাংকের সর্বশেষ শেয়ার দর অবস্থান করছে ৮.৭০ টাকায়। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সর্বশেষ শেয়ার দর ৯.২০ টাকা, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ৩.৯০ টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের সর্বশেষ শেয়ার দর ৯.১০ টাকা, এনসিসি ব্যাংকের সর্বশেষ শেয়ার দর ৯.৪০ টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংকের সর্বশেষ শেয়ার দর ৭.৩০ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সর্বশেষ শেয়ার দর ৯.৮০ টাকা। সিরামিক খাতের শাইন পুকুর সিরামিকসের সর্বশেষ শেয়ার দর ৮.৯০ টাকায় অবস্থান করছে।

নন ব্যাংকিং আর্থিক খাতের বিআইএফসির শেয়ার দর অবস্থান করছে ৭.৮০ টাকায়, ফারইস্ট ফাইন্যান্সের সর্বশেষ শেয়ার দর ৮.১০ টাকা, ফাস ফাইন্যান্সের সর্বশেষ শেয়ার দর ৯.০০ টাকা, ফার্স্ট ফাইন্যান্সের সর্বশেষ শেয়ার দর ৬.৫০ টাকা, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সর্বশেষ শেয়ার দর ৮.৫০ টাকা, পিপলস লিজিংয়ের সর্বশেষ শেয়ার দর ৬.৯০ টাকা, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের সর্বশেষ শেয়ার দর ৯.০০ টাকা এবং প্রাইম ফাইন্যান্সের সর্বশেষ শেয়ার দর ৭.০০ টাকা।

খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের ফাইন ফুডসের সর্বশেষ শেয়ার দর ৮.৯০ টাকায় অবস্থান করছে। মেঘনা কনডেন্স মিল্কের সর্বশেষ শেয়ার দর ৭.৩০ টাকা এবং মেঘনা পেটের সর্বশেষ শেয়ার দর ৫.৭০ টাকা।

কাগজ ও মুদ্রণ খাতের কোম্পানি খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের সর্বশেষ শেয়ার দর ৯.১০ টাকায় অবস্থান করছে। এছাড়াও ওষুধ ও রসায়ন খাতের বেক্সিমকো সিনথেটিকের সর্বশেষ শেয়ার দর ৬.০০ টাকা। সেবা ও আবাসন খাতের বিডি সার্ভিসের সর্বশেষ শেয়ার দর ৫.৫০ টাকা এবং ইউনাইটেড এয়ারের সর্বশেষ শেয়ার দর ৪.৭০ টাকা।

বস্ত্র খাতের কোম্পানি সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলের সর্বশেষ শেয়ার দর ৮.১০ টাকা, ঢাকা ডাইংয়ের সর্বশেষ শেয়ার দর ৯.২০ টাকা, ডেল্টা স্পিনার্সের সর্বশেষ শেয়ার দর ৭.৮০ টাকা, দুলামিয়া কটনের সর্বশেষ শেয়ার দর ৭.০০ টাকা, ফ্যামিলি টেক্সের সর্বশেষ শেয়ার দর ৮.২০ টাকা, টাকা, জেনারেশেন নেক্সটে সর্বশেষ শেয়ার দর ৬.৭০ টাকা, ম্যাকসন স্পিনিংয়ের সর্বশেষ শেয়ার দর ৭.১০ টাকা, মেট্রো স্পিনিংয়ের সর্বশেষ শেয়ার দর ৭.৮০ টাকা এবং সোনারগাঁ টেক্সটাইলের সর্বশেষ শেয়ার দর ৮.৫০ টাকা।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি এ.কে.এম মিজান-উর-রশিদ চৌধুরী  বলেন, এসব কোম্পানিগুলো মধ্যে বেশিরভাগ স্বল্প মূলধনী এবং লোকসানী। ক্রমাগত লোকসান এবং ডিভিডেন্ড দিতে ব্যর্থ  হওয়ায় এ সমস্ত কোম্পানি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

তিনি আরও বলেন, বাজারে তালিকাভুক্ত যে সকল কোম্পানি লেকসান দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড থেকে বঞ্চিত করছে সে সকল কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এবং লোকসান থাকলেও বিনিয়োগকারীদের বাধ্যতামূলক ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিতে হবে। কারণ কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসা বাড়ানোর জন্য বাজার থেকে টাকা উত্তোলন করে। তাহলে তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিগুলোর লোকসান হচ্ছে কিভাবে? ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে ব্যবসা করলে ডাবল ডিজিটে সূদ দিতে হয়। তাহলে বিনিয়োগকারীরা কেন সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড পাবেনা। ৩২ কোম্পানিতে আস্থা নেই বিনিয়োগকারীদের।