united air

শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা:

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইউনাইটেড এয়ারের বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির ভবিষ্যত নিয়ে দু:চিন্তায় পড়েছেন। তারা আদৌ মুল পুঁজি ফিরে পাবেন না কিনা এ নিয়ে দু:চিন্তায় রয়েছেন। কোম্পানিটি বিনয়োগকারীদের সাথে প্রতারনা করছেন বলে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন।  সম্প্রতি ‘এ’ থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নেমে গেছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে কোম্পানির শেয়ার দরে।

এদিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে যাওয়ার আগেই কোম্পানির শেয়ারদর ছিল নিম্নমুখী। এখন এ শেয়ারের চাহিদা আরও কমে গেছে। ক্যাটাগরি পরিবর্তনের পর দুই কার্যদিবসেই শেয়ারের দরে পতন দেখা গেছে। বর্তমানে এ শেয়ার লেনদেন হচ্ছে চার টাকা ৭০ পয়সায়। দর আরও কমে যেতে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই।

বুধবারের বাজার চিত্রে দেখা যায়, এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতার সংখ্যা বেশি। লোকসানি এ শেয়ার বিক্রি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বিনিয়োগকারীরা। বিক্রেতা বেশি থাকায় সকাল থেকেই শেয়ারদরে পতন দেখা যায়। দিনের একপর্যায়ে চার টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হলেও দিন শেষে তা নেমে আসে চার টাকা ৭০ পয়সায়।

কোম্পানিটির মোট ছয় লাখ ৮০ হাজার ৩৭৫টি শেয়ার এক হাজার ৫৫১ বার হাতবদল হয়। এদিকে গত এক বছরের লেনদেনচিত্র লক্ষ করলে দেখা যায়, প্রতিটি শেয়ার সর্বোচ্চ ১১ টাকা ২০ পয়সায় এবং সর্বনিম্ন চার টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটি ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। টানা ছয় মাস প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধ থাকায় গত রোববার ডিএসই’র পক্ষ থেকে ‘এ’ থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবনমনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ফলে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে এখন ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানি হিসেবে লেনদেন করতে হচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ কোম্পানির মোট শেয়ারের ৭৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে। পাঁচ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ শেয়ার পরিচালকদের কাছে। অন্যদিকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ১৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ শেয়ার।

জানা যায়, প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা নাজুক দেখে নিজেদের শেয়ার ছেড়ে দিয়েছেন এর পরিচালকরা। ২০১৫ সালের ৩০ জুন কোম্পানির পরিচালকদের কাছে ছিল সাত দশমিক শূন্য চার শতাংশ শেয়ার। এখন যার পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে পাঁচ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ। অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে পরিচালকরা বিক্রি করেছেন দুই শতাংশের বেশি শেয়ার।

গত ৫ মার্চ থেকে ফ্লাইট বন্ধ থাকা এ প্রতিষ্ঠানে শেয়ারের দর দীর্ঘদিন থেকে ছয় টাকার মধ্যে লেনদেন হচ্ছে। বর্তমানে তা পাঁচ টাকার নিচে নেমে এসেছে। লভ্যাংশ দেওয়ার ক্ষেত্রেও বরাবরই কৌশলী প্রতিষ্ঠানটি তালিকাভুক্তির পর প্রতি বছরই নগদ লভ্যাংশ না দিয়ে ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। সেটা শুধু ক্যাটাগরি ধরে রাখার জন্য।

অন্যদিকে রাইট শেয়ার ছাড়ার অযোগ্য এ কোম্পানিটি সম্প্রতি প্লেসমেন্ট ও বন্ড ইস্যু করে ৬২৪ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহের অনুমোদন পেয়েছে। এ অর্থ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ঋণ পরিশোধ ও ব্যবসা সম্প্রসারণ করবে। এর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে প্লেসমেন্ট শেয়ার বিক্রি করে ৪০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে কোম্পানিটি। বাকি ২২৪ কোটির বন্ড ইস্যু করে।

২০১১ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এক প্রজ্ঞাপনে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করে। ফলে নিয়ম অনুযায়ী ইউনাইটেড এয়ার রাইট শেয়ার ছাড়তে পারেনি।