dse-index-3-5শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিবাচক সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার আভাস দিচ্ছে। আজ লেনদেনের শুরুতে উর্ধ্বমুখী প্রবনতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শুরু হলেও দিনশেষে ১০০ সুচকের উন্নতি হয়েছে। তবে লেনদেন আশানুরুপ না বাড়লে সামনে কার্যদিবস গুলোতে লেনদেন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা আজকের বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন। কারন টানা দরপতনের পর আজ প্রথম সুচকের উকি মারছে। তাছাড়া বাজার পরিস্থতি সামনের কার্যদিবস গুলোতে আরো ভাল হবে বলে আশা করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

আজকের বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে বিএমবিএর প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান বলেছেন, পুঁজিবাজার কিছুটা স্থিতিশীলতার আভাস দিচ্ছে। সবেতো বাজারটি ইতিবাচক হলো। এটি আর দু-একদিন গেলে আরও ভালো হবে। সরকারের সব মহল থেকেই আমাদের প্রতি ইতিবাচক আন্তরিকতা প্রদর্শন করছে।

কাজেই বাজার সামনের দিনগুলোতে আরো গতিশীলতার সাথেই এগোবে ইনশাআল্লাহ। পাশাপাশি আজ ট্রেক হোল্ডারদের নিয়ে বৈঠকে ট্রেডিং বাড়ানোর ব্যাপারে সবাই একমত হলে সামনের দিনগুলো বিনিয়োগকারীদের জন্য আরো সুখময় হবে বলে সবাই প্রত্যাশা করেছেন। এদিকে কোনো ধরনের শেয়ার বিক্রি না করে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ (সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার লিমিট) সমন্বয়ের নীতিগত সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ফলে টানা দরপতনের পর অবশেষে ঘুরে দাড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এক্সপোজার না বাড়ালে পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে যাবে বেশকিছুদিন ধরে এমন গুঞ্জন ছিলো বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক্সপোজার সমন্বয়ের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দেয়। ফলে বিনিয়োগকারীদে মধ্যে যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিলো তা কেটে গেছে। ফলে বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক পক্ষ থেকে বলা হয়, শেয়ারবাজারে বাড়তি বিনিয়োগ সমন্বয়ের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংককে কোনো শেয়ার বিক্রি করতে হবে না। শেয়ারবাজারে বর্তমানে নির্ধারিত সীমার চেয়ে সামান্য বেশি বিনিয়োগ রয়েছে ১০টি ব্যাংকের। তা আইনি সীমায় নামিয়ে আনতে তাদের জন্য কেস টু কেস ভিত্তিতে সমাধান দিবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক এবং মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বলেন, এক্সপোজার লিমিটের সময় না বাড়িয়ে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মূলধন বাড়ানোর মাধ্যমে সমন্বয়ের যে নীতি বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রহণ করেছে তা বাজারের জন্য অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে। এতে বাজারে সেল প্রেসার থাকবে না।

তিনি বলেন, নীতিগত সহায়তায় অস্পষ্টতা ছিল থাকায় আজকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার ব্যাখ্যা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পুঁজিবাজারে সেল প্রেসার কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন উদ্যোগ বর্তমান বাজারের জন্য ইতিবাচক হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক পুঁজিবাজারের প্রতি আগের চেয়ে অনেক নমনীয় অবস্থানে এসেছে। এতে বাজারের প্রতি সংশ্লিষ্টদের অহেতুক ভীতি দূর হবে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) এক শীর্ষ নেতা বলেন, ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ের জন্য সময় বাড়ানোর পরিবর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে নীতি গ্রহণ করেছে তা যথাযথ। যদি নীতি গ্রহণ না করে সমন্বয়ের জন্য দুই বছর সময় বাড়ানো হতো, তাহলে দুই বছর পরে আবার শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ত। এই নীতি গ্রহণের ফলে এখন ব্যাংকগুলোকে শেয়ার বিক্রয় করতে হবে না। এতে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।