poton marketশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ সীমার সময় বাড়ানোকে কেন্দ্র করে দেশের দুই পুঁজিবাজারে টালমাতাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রত্যেক কার্যদিবসে সুচকের দরপতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। বাজারের টানা দরপতনে মুল পুঁজি নিয়ে অস্থির অবস্থার মধ্যে দিন কাটচে বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীদের মুল পুঁজি নিয়ে দোয়ালো পিট থেকে গেছে। এ অবস্থায় কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।

চলতি মাসে দশ কার্যদিবস পতনে দেশের দুই পুঁজিবাজারে সূচক কমেছে ৬০০ পয়েন্ট। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কমেছে ২১২ পয়েন্ট। সেই হিসাবে গড়ে ২১.২ পয়েন্ট করে সূচক কমেছে। সিএসইতে কমেছে ৩৮৯ পয়েন্ট। সেই হিসাবে দিনে ৩৯ পয়েন্ট করে সূচক কমেছে। একই সঙ্গে দুই বাজারেই কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

টানা দরপতনে সূচক কমায় পুঁজিবাজারের প্রতি আস্থা হারিয়েছে বিনিয়োগকারীরা। শেয়ার কেনাবেচা বাদ দিয়ে বাজারের বাইরেই রয়েছে তারা। কম্পানির দাম হ্রাস পাওয়ায় অনেক কম্পানির শেয়ারের দাম কেনা দামের অনেক নিচে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। লোকসান করে অন্য শেয়ার কেনার সাহস পাচ্ছে না। ২০১০ সালে বাজার ধসের সময় ধারাবাহিকভাবেই কমেছিল সূচক। যদিও পতনের আগে ব্যাপকভাবে ফুলে উঠেছিল সূচক।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছে, ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগসীমার সময় বাড়ানোকে কেন্দ্র করে বাজারে অতিরিক্ত বিক্রয় চাপ রয়েছে। ব্যাংক কম্পানি আইন অনুযায়ী কোনো ব্যাংক তার মূলধনের (পরিশোধিত মূলধন, স্ট্যাটিউটরি রিজার্ভ, রিটেইনড আর্নিং ও শেয়ার প্রিমিয়ামের যোগফল) সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারে।

২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ২০১৬ সালের ২১ জুলাই পর্যন্ত অতিরিক্ত বিনিয়োগ সীমা সমন্বয়ের সময় বেঁধে দেয়। এতে ২৫ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ থাকা ব্যাংকগুলো শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে নিয়মের মধ্যে আসছে। যার জন্য বাজারে শেয়ারের জোগান বেশি রয়েছে, কিন্তু ক্রেতা কম থাকায় শেয়ারের চাহিদা কম। যার দরুন ধারাবাহিকভাবেই শেয়ারের দাম কমার সঙ্গে কমছে মূল্যসূচক।

বাজারের এই নেতিবাচক অবস্থার উত্তরণে সমন্বয়সীমা আরো দুই বছর সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিল সংশ্লিষ্টরা। তবে গত বুধবার সময় না বাড়িয়ে শেয়ার বিক্রি না করে সমন্বয়ে নীতিগত সহায়তা দেওয়ায় সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

সময়সীমা না বাড়িয়ে নীতি সহায়তা হিসেবে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ যেভাবে হিসাব করা হয় তাতে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত দুই সপ্তাহের দশ কার্যদিবসের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইতে ২১২ পয়েন্ট সূচক কমেছে। যার মধ্যে চলতি সপ্তাহেই সূচক কমেছে ১৪৩ পয়েন্ট।

হিসাব অনুযায়ী প্রতিদিনই ডিএসইতে সূচক কমেছে ২১.২ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে চার দিন সূচকের পতন ঘটে। এক দিন সূচক বাড়লেও তা খুবই সামান্য। এতে সূচক কমেছিল ৬৯ পয়েন্ট, আর বেড়েছিল মাত্র ১ পয়েন্ট।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দশ কার্যদিবসে এই বাজারে সূচক কমেছে ৩৮৯ পয়েন্ট। যার মধ্যে চলতি সপ্তাহের পাঁচ দিনে কমেছে ২৭৭ পয়েন্ট। সেই হিসাবে দিনে গড়ে সূচক কমেছে ৩৯ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে চার কার্যদিবস পতনে সূচক কমেছিল ১১২ পয়েন্ট, আর বেড়েছিল মাত্র ১৪ পয়েন্ট।