bsec lagoশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক গঠিত স্টিয়ারিং কমিটি জাতীয় পর্যায়ে ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগাম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দশটি উপকমিটি গঠন করেছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিনিয়োগে সচেতনতা বাড়াতে এ কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি।

বিনিয়োগকারীদের সক্ষমতা বাড়াতে ও মাঠ পর্যায়ে বিনিয়োগকারী তৈরি করতে ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগাম তিন ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। ধাপ তিনটি হচ্ছে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী। সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।

বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিএসইসির কমিশন সভা কক্ষে এ সংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটির সভায় এ উপকমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রসঙ্গত, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অর্থনৈতিক ইস্যুতে জনসাধারণের জ্ঞান বৃদ্ধিতে ‘ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগাম’ নামে একটি বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করে বিএসইসি। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুই স্তর বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে সংস্থাটি।

কমিশনের চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক করে ১০ সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটিতে রয়েছেন বিএসইসির ৪ জন কমিশনার,ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের প্রেসিডেন্ট। এছাড়া কমিটিতে সদস্য সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান।

বিএসইসির মূখপাত্র মো. সাইফুর রহমান এ কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলেন, আমরা তিন ধাপে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর এই ধাপ বাস্তবায়নের জন্য আরও ১০টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। দেশের অধিকাংশ মানুষই সঞ্চয় ও বিনিয়োগ বিষয়ে সচেতন নয়। টেকসই উন্নয়নের জন্য আর্থিক উন্নতি ও সক্ষমতা তৈরি করা প্রয়োজন। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় অজ্ঞতা অনেক ক্ষেত্রে মানুষের আর্থিক উন্নতির সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্থ করে। আমরা এ বাধা দূর করার প্রচেষ্টা হিসেবেই কমিশন এ কর্মসূচি নিয়েছি।

তিনি জানান, কর্মসূচি বাস্তবায়নে দেশের বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও আর্থিক সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষক হিসেবে ব্যবহার করা হবে। সামগ্রিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আজকের সভায় ১০টি উপ-কমিটি করা হয়েছে। এসব কমিটি আর্থিক শিক্ষার পাঠ্যসূচি প্রণয়ণ, শিক্ষা কর্মসসূচির প্রক্রিয়া বা ধরণ নির্ধারণ, উপকরণ নির্বাচন, প্রকাশনা ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে।

সাইফুর রহমান আরও জানান, কর্মসসূচি বাস্তবায়নে প্রাথমিকভাবে সাড়ে ৭ কোটি টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ছাড়াও স্টক এক্সচেঞ্জ, সিডিবিএল, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউস, সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি, তালিকাভূক্ত কোম্পানিসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এ অর্থ সংগ্রহ করা হবে। আগামী জুলাই মাসে জাতীয় পর্যায়ে একটি সেমিনারের মাধ্যমে কর্মসহৃচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।

পর্যায়ক্রমে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়কে সম্পৃক্ত করা হবে। কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা একটি স্বতন্ত্র বিভাগ খোলারও পরিকল্পনা করছে। এমনকি স্কুল ও কলেজের পাঠ্যসূচিতেও সাধারণ শিক্ষার অর্ন্তভূক্ত করা হবে। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে আর্থিক জ্ঞান বিষয়ে সাধারণ জ্ঞান ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। টেলিভিশনে নাটিকা প্রচার, সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন প্রদান করে এবং লিফলেট ও পোষ্টারের মাধ্যমেও এ বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করা হবে।