sharebazar investফাতেমা বিন ইসলাম, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) ২০ শতাংশ কোটার সময়সীমা ৩০ জুন ২০১৭ পর্যন্ত বাড়াতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

অর্থমন্ত্রনালয়ের চিঠি হাতে পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার থেকেই তা পরিপালনের প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসিইসি কমিশনের মুখপাত্র এম. সাইফুর রহমান শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকার বাইরে  থাকলেও শেয়ারবাজারকে খুব দ্রুত গতিতে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে অর্থ মন্ত্রনালয়ের জারি করা ১৫ দফা নির্দেশনা সংক্রান্ত চিঠি প্রাপ্তি এবং তার আলোকে কাজ শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছেন।

চিঠির বিষয়বস্তু জেনে অধিকাংশ বিনিয়োগকারী সেটিকে বর্তমান সময়ের জন্য খুবই কার্যকরী পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। বিএসইসি যদি ওই চিঠির সবগুলো নির্দেশনা ধরে ধরে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালায় তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই বাজার একটি কাঙ্খিত ইতিবাচক অবস্থানে গিয়ে পৌছাবে বলে তিনি মনে করেন।

উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে বাজারের টানা পতন রোধে প্রথম দফায় ডিএসই  গুরুত্বপূর্ণ ৩০ ট্রেক হোল্ডারের সাথে বৈঠক করে এবং দ্বিতীয় দফায় ডিএসই বিএসইসি এবং সিকিউরিটিজ হাউজগুলোর নির্বাহী প্রধানরা আলোচনায় মিলিত হয়। এর পরপরই বুধবার পতন অবস্থা থেকে বাজারকে তুলে আনতে মন্ত্রণালয় থেকে ১৫ দফার নির্দেশনা পাঠানো হয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম-সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদের কাছে গত ২৮ মার্চ এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বৃহৎ স্বার্থে ও পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সকল প্রাথমিক গণপ্রস্তাব ইস্যুতে ২০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের সময়সীমা ১ জুলাই ২০১৬ থেকে বাড়িয়ে ৩০ জুন ২০১৭ পর্যন্ত করার অনুরোধ করা হলো।

জানা যায়, এর আগে গত বছরের ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ৫৬০তম কমিশন সভায় গণপ্রস্তাব ইস্যুতে কোটা সংরক্ষণের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সময়সীমা বাড়ানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব ইস্যুতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকার ২০১১ সালের ২৩ নভেম্বর প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। প্রণোদনা প্যাকেজে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বিশেষ স্কিম দেওয়ার জন্য ওই বছরের ২৭ নভেম্বর ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফায়েকুজ্জামানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।

গঠিত কমিটি ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে বিভিন্ন সুপারিশসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ কোটা বরাদ্দের কথা বলা হয়। এরপর ওই বছরের ৫ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ২০ শতাংশ কোটায় আবেদন করার জন্য ১৮ মাস সময় বেঁধে দেয় (১ জুলাই ২০১২ থেকে ডিসেম্বর ২০১৩)। এর পর এখন পর্যন্ত তিন দফায় সময় বাড়ানো হয়েছ।