dseফাতিমা জাহান, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে গত সপ্তাহে সুচক ও আর্থিক লেনদেনের পাশাপাশি গড় লেনদেন কমেছে। সূচক ও আর্থিক লেনদেনে গত সপ্তাহেও ভালো সময় কাটেনি দেশের পুঁজিবাজারে। একই সঙ্গে কমেছে বাজার মূলধন ও মূল্য-আয় অনুপাত। গত সপ্তাহে দেশের প্রধান শেযারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গড় আর্থিক লেনদেন হয়েছে ৪৪৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে এর পরিমাণ ছিল ৪৯৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। এ হিসাবে গড় লেনদেন কমেছে ৯.৫৮ শতাংশ।

তবে গড় লেনদেন কমলেও আগের সপ্তাহের তুলনায় মোট লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ খাকায় গত সপ্তাহে (২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি) ৪ কার্যদিবসে ১ হাজার ৯৮৪ কোটি ৮৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকার শেযার লেনদেন হয়েছে।

বিপরীতে গত সপ্তাহে (২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ) ৫ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২৪৩ কোটি ৩০ লাখ ৭৮ হাজার টাকার শেয়ার। এ হিসাবে আগের সপ্তাহের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১৩.০২ শতাংশ।

গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের ৯৫.৩৩ শতাংশ হয়েছে ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে। এছাড়া ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২.০১ শতাংশ, ‘এন’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১.৯৩ শতাংশ ও ‘জেড ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ০.৭৪ শতাংশ লেনদেন হয়েছে।

গড় লেনদেনের পাশাপাশি গত সপ্তাহে মূল্যসূচকেরও পতন হয়েছে। সপ্তাহের ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ৪ কার্যদিবসে সূচকের পতন হয়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে মূল্য সূচকের সামান্য উত্থান ঘটে। এরফলে টানা পতনের অবসান ঘটে। এর আগে টানা ৬দিনে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের ২৩৬ পয়েন্ট পতন হয়। আর টানা এ পতনের কারণে ডিএসইর প্রধান সূচকটি ফের সাড়ে ৪ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে আসে। এরফলে ৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে যায় সূচক।

ডিএসইএক্সের ৪৫৬৭.৫৭ পয়েন্ট দিয়ে সপ্তাহের লেনদেন শুরু হয়। সপ্তাহশেষে তা নেমে আসে ৪৪৭২.৮৪ পয়েন্টে। এ হিসাবে গত সপ্তাহে সূচক কমেছে ৯৪.৭৩ পয়েন্ট। সূচক কমার এ হার ২.০৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচক কমেছিল ২০.১০ পয়েন্ট। অপরদিকে ডিএস৩০ সূচক ৩৪.৫২ পয়েন্ট কমে সপ্তাহশেষে ১৭১৮.৬৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২৮.৮৬ পয়েন্ট কমে ১০৮৬.৩৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৩০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে বেশির ভাগ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর কমেছে। ৭২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর বাড়লেও কমেছে ২৩১টির ও অপরিবর্তিত ছিল ২৪টির দর।

এদিকে গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধনের পরিমাণও কমেছে। সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১৬ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। সপ্তাহশেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকায়। বাজার মূলধন কমার এ হার ২.০৬ শতাংশ। এছাড়া আগের সপ্তাহের তুলনায় ২.০৬ শতাংশ কমে মূল্য-আয় অনুপাত দাঁড়িয়েছে ১৪.৯৬-তে। সপ্তাহের শুরুতে এর পরিমাণ ছিল ১৫.২৭।

সপ্তাহ শেষে লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।এ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪৮কোটি ৩০ লাখ ৩৯ হাজার টাকার। সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৬.৬১ শতাংশই লেনদেন হয়েছে এ কোম্পানির। লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ৯০ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে এ কোম্পানির।

যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৪.০২ শতাংশ। লেনদেনের তৃতীয় স্থানে থাকা সিঙ্গার বাংলাদেশের সপ্তাহজুড়ে ৭৩ কোটি ১২ লাখ ৮৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৩.২৬ শতাংশ। লেনদেনের শীর্ষ দশে থাকা অপর ইস্যুগুলো হচ্ছে- ইউনাইটেড পাওয়ার, ইফাদ অটোস, বেক্সিমকো ফার্মা, বিএসআরএম, সিএমসি কামাল, কাশেম ড্রাইসেল, স্কয়ার ফার্মা।