আমরা নেটওয়ার্কের শেয়ার কারসিাজির নেপথ্যে ডাটা সেন্টার বিক্রি, তদন্ত শুরু বিএসইস’র

শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের কোম্পানি আমরা নেটওয়ার্ক লিমিটেড এর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে কোম্পানিটি একটি ডেটা সেন্টার বিক্রি করে। ওই বিক্রির ঘোষণার পর এক বছরের ব্যবধানে শেয়ার দরে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়। বিষয়টির পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসন্ধানে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
কমিটিকে আগামী ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে। বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন কমিশনের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া এবং সহকারী পরিচালক মো. মোসাব্বির আল আশিক। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ইতোমধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয়েছে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১ আগস্ট ‘আমরা নেটওয়ার্ক’-এর শেয়ারের দাম ছিল ৩৬ দশমিক ১০ টাকা। ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারিতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭২ দশমিক ৫০ টাকা, এবং একই বছরের ৫ জুন সর্বোচ্চ বেড়ে দাঁড়ায় ৮২ দশমিক ৮০ টাকায়। ফলে ডেটা সেন্টার বিক্রির ঘোষণার পর এক বছরের মধ্যে কোম্পানির শেয়ারদর প্রায় দ্বিগুণ হারে বেড়ে যায়।
বিএসইসির অভিমত, ডেটা সেন্টার বিক্রির পেছনে প্রকৃত উদ্দেশ্য এবং শেয়ারদরে অস্বাভাবিক পরিবর্তনের কারণ অনুসন্ধান বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় জরুরি। কমিশন মনে করে, এতে বাজারে তথ্যের যথার্থতা ও জবাবদিহিতার বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটি বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ওই বছর শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ২ দশমিক ৪৬ টাকা এবং শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ৩৭ টাকা ১ পয়সা।
ডেটা সেন্টারটি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয় সংশ্লিষ্ট পক্ষ ‘আমরা হোল্ডিংস’-এর কাছে, যেটি কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনায় প্রভাবশালী। সম্পদটির হিসাব মূল্য ছিল ৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ফলে কোম্পানিটি প্রায় ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকার লাভ দেখায়, যা তাদের মতে মুনাফায় সরাসরি প্রভাব ফেলবে।
বর্তমানে কোম্পানির মোট পরিশোধিত মূলধন ৯২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা এবং মোট শেয়ারের সংখ্যা ৯ কোটি ২৯ লাখ ৭৯ হাজার ৯১২টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তাদের হাতে রয়েছে ৩৩ দশমিক ০৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২১ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৪৫ দশমিক ২৫ শতাংশ শেয়ার।