শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজারে কোনোভাবেই আস্থা ফিরছে না। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। তবে সেসব উদ্যোগের কোনোটিতেই বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে না। দিন দিন এ আস্থা আরও তলানিতে ঠেকছে। এতে যেমন বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে ব্রোকারেজ হাউসগুলোও লেনদেন খরার ফলে বিপাকে পড়েছে। ফলে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সব গোষ্ঠীর মনেই এখন এক চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে।

কবে ফিরবে পুঁজিবাজারে সুদিন, সেই অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তারা। কারণ মাঝে মধ্যে সূচকের উকি মারলেও বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না। তাই আস্থা ফিরিয়ে পুঁজিবাজারকে গতিশীল করা বিএসইসির বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন একাধিক বিনিয়োগকারীরা। কারণ বর্তমান কমিশনের উপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেই বলেই চলে। এ অবস্থায় যে কোন মূল্যে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। আস্থা ফিরলে দ্রুত বাজার ঘুরে দাঁড়াবো বলে তারা মনে করেন।

এদিকে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের বড় পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে হঠাৎ সূচকের বড় দরপতনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিনিয়োগকারীদের মাঝে। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের বড় দরপতন কারেকশন নয় বরং কারসাজির লক্ষণ বলে মনে করছে। এছাড়া বাজারে আস্থা ফিরে না আসায় ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। আস্থা ফিরে আসলে পুঁজিবাজারে অর্থের অভাব হবে না বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। কারণ গত ১০ মাসেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারেনি।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, মে মাসে ধারাবাহিক পতনের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) লেনদেন। এই সময়ে ২১ কার্যদিবস লেনদেনে মাত্র সাত কার্যদিবস সূচক বেড়েছে। তবে চলতি জুনে এরই মধ্যে ৭ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে পুঁজিবাজারে। এর মধ্যে পাঁচ কার্যদিবই সূচক বেড়েছে এবং দুই কার্যদিবস সূচকের দরপতন হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ কার্যদিবস সূচক বেড়েছে ১৬৯ পয়েন্ট। এর মধ্যে বাজেট ঘোষণার পরের কার্যদিবস ৩ জুন সূচক কমেছিল ২৪ পয়েন্ট। আর ঈদ পরবর্তী সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচক কমেছে প্রায় ৪৪ পয়েন্ট। এছাড়া সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর ও টাকার পরিমানে লেনদেন। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৪৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭৩৯ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৭৭০ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৭ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৭ টির, দর কমেছে ২৭৬ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৪ টির। ডিএসইতে ৩১৩ কোটি ৬২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১০৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪১৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকার ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই .০৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ২৪৫ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৮৯ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৭ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৯৬ টির এবং ২৬ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১১ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।