৭ টাকার শেয়ার ৩৩ টাকার বাড়ার পর ঘুম ভাঙছে বিএসইসি’র

শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কাগজ ও প্রকাশনা খাতের বন্ধ কোম্পানি খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ইন্ডাষ্টিজের শেয়ার দাম সম্প্রতি অস্বাভাবিকভাবে শেয়ারদর বৃদ্ধি কারনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) তদন্ত করার নির্দেশে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আজ মঙ্গলবার বিএসইসি’র সার্ভিল্যান্স বিভাগের উপ-পরিচালক মো. নানু ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ডিএসই’র প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো হয়েছে। তবে শেয়ারটির দর ৩৬১ দশমিক ১১ শতাংশ বাড়ার পর ঘুম ভাঙছে বিএসইসি’র ।
সম্প্রতি দেশের পুঁজিবাজারে এমন কারসাজি চক্রের উপদ্রব বেশি মাত্রায় বেড়েছে। কারখানা ও উৎপাদন বন্ধ থাকা খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং (কেপিপিএল) লিমিটেডের শেয়ার নিয়েও কারসাজির অভিযোগ উঠেছে। শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে অস্বাভাবিকভাবে দর বাড়ানো হচ্ছে উৎপাদন বন্ধ লোকসানি এই কোম্পানির। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, খুলনা প্রিন্টিংয়ের শেয়ার নিয়ে নতুন করে কারসাজি শুরু হয়েছে। ২০২০ সালের পর থেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি কোন বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করছে না। শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ দিচ্ছে না। আর্থিক প্রতিবেদন সম্পর্কে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের কোন তথ্যও দিচ্ছে না। তবুও উৎপাদন বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েই চলেছে। শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে মাত্র ৩০ কার্যদিবসের ব্যবধানে ৭ টাকার শেয়ারের দর ৩৬১ দশমিক ১১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
এর আগে, গত বছরেও কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারটির দর বৃদ্ধি করে সিন্ডিকেট চক্র। লোকসানি কোম্পানির দর সর্বোচ্চ ৫৬ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত বাড়ায় কারসাজি চক্র। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্থ করে ফায়দা লুটে নেয় তারা। তার নিঃস্ব হয় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। আবারও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সর্বস্বান্ত করে লাভবান হওয়ার পায়তারায় মেতেছে সেই কারসাজিকারীরা।
তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ইন্ডাষ্টিজের শেয়ার কারসাজিতে বাজারের বহুল আলোচিত একটি চক্রের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এর আগে ঐ গ্রুপটি খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করছে। ২০১৪ সালে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে এটি ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে লেনদেন করছে।
কোম্পানিটির মোট ৭ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার শেয়ার রয়েছে। অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৭৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। পুঞ্জীভূত লোকসান রয়েছে ৮৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৩৯.৭৬ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১.১১ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ৫৯.১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৩ ডিসেম্বর খুলনা প্রিন্টিংয়ের দাম ছিল ৭ টাকা ২০ পয়সা। যা আজ ৪ ফেব্রুয়ারি লেনদেন হয়েছে ৩৩ টাকা ২০ পয়সায়। মাত্র ৩০ কর্মদিবসে শেয়ারটির দর বেড়েছে ২৬ টাকা বা ৩৬১ শতাংশ। উৎপাদন বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানির শেয়ারদর কারসাজি ছাড়া এমন হারে বৃদ্ধি পাওয়া অসম্ভব বলে মনে করছে বিএসইসি।