শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: নতুন জোয়ার এসেছে দেশের পুঁজিবাজারে। এই কিছুদিন আগেও যেখানে নানা চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে পড়ে যে বাজার মরার মতো ধুঁকছিল, সে বাজার এখন টানা ঊর্ধ্বমুখী। বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের আনাগোনা। প্রায় দেড় বছর মন্দার পর পুঁজিবাজারে প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে। শেয়ারদরের সর্বনিম্ন মূল্যসীমা বা ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হয়েছে। বাজারও তার স্বাভাবিক নিয়মে ওঠানামা করছে। অন্যদিকে এতদিন ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর অনেকেই মুখ ফিরিয়ে থেকেছে।

এখন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় হওয়ার খবর পেয়ে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাও বাজারমুখী হতে শুরু করেছেন। ফলে ধীরে ধীরে গতিশীল হচ্ছে পুঁজিবাজার। এদিকে বিনিয়োগকারীদের হঠাৎ করে আগ্রহ বেড়েছে প্রকৌশল ও ওষুধ রসায়ন খাতে। আজ লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে এই দুই খাতের অবস্থান।

বাজার-সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, কারসাজি রোধ এবং আইন ও বিধিবিধানের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের গতিশীলতাকে আগামীতেও ধরে রাখা সম্ভব হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাও বাড়বে, যা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই করবে বাজারকে।

এদিকে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের কিছুটা উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে ডিএসইর সূচকের টানা উত্থানের পর একটু প্রফিট টেকিং চলছে। এছাড়া ডিএসইর অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হলেও সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ডিএসইর লেনদেন কিছুটা কমলেও সাড়ে ১৬শ কোটি টাকার ঘর ছাড়িয়েছে। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের সাথে বেড়েছে লেনদেন। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর সূত্র মতে, ডিএসইতে মোট ৩৯৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৮টির, কমেছে ২১৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির। আজ ডিএসইতে ১ হাজার ৬৫১ কোটি ৮২ লাখ ৯৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গত সোমবার ডিএসইতে ১ হাজার ৬৫৪ কোটি ৭৮ লাখ ২৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। ফলে ডিএসইতে আগের দিনের ব্যবধানে ২ কোটি ৯৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন কম হয়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ৪১.৮৬ পয়েন্ট বা ০.৬৬ শতাংশ বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ৩২২.৫৯ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৫.৫৭ পয়েন্ট ০.৪০ শতাংশ বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৭৬.৬৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৮.৫৫ পয়েন্ট ০.৪০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩৩.২৪ পয়েন্টে।

অপর পুঁজিবাজার সিএসইর প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ৪১.৫৫ পয়েন্ট বা ০.৩৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৮৩৬.২৯ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭০.৪০ পয়েন্ট বা ০.৩৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ১০২.৬৪ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৪.৫১ পয়েন্ট বা ০.৩৮ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১৬২.০৯ পয়েন্টে এবং সিএসই৩০ সূচক ১১.৩৫ পয়েন্ট বা ০.০৮ শতাংশ বেড়ে ১৩ হাজার ৩৮৮.৪৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

আজ সিএসইতে ৩০৫টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩৬টির, কমেছে ১৩২টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টির। দিন শেষে সিএসইতে ২৩ কোটি ৩২ লাখ ৭১ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৯ কোটি ১৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার।