শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে দেশের পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচকের দরপতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। মুলত শেয়ার বিক্রির চাপের মধ্যদিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। আস্থা সংকট থাকায় ঘুরে দাঁড়াতো পারছে না পুঁজিবাজার। ফলে লেনদেন খরায় চলছে পুঁজিবাজার। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ২ পয়েন্ট। তবে অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে ৭ পয়েন্ট। ডিএসইতে সূচকের পাশাপাশি কমেছে লেনদেনও। তবে সিএসইতে কিছুটা ইতিবাচক প্রবণতার মধ্যদিয়ে লেনদেন হয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চরম আস্থা ও তারল্য সংকটের কারণে পুঁজিবাজারে সূচকের টালমাতাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এছাড়া বাজার থেকে টাকা বের হয়ে যাওয়ার কারণে এমনটি হচ্ছে। তেমনি দীর্ঘদিন ভালো মৌল ভিত্তি শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকায় বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে নতুন বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারমুখী হচ্ছে না। যার কারনে লেনদেন খরায় ভুগছে পুঁজিবাজার।

স্টক অ্যান্ড বন্ডের বিনিয়োগকারী আবুল কাশেম বলেন, বাজার পতনের মূল কারণ হচ্ছে আস্থা সংকট। কারণ বাজার আজ ভাল তো কাল খরাপ। এ অবস্থার মধ্যে দীর্ঘ দুই বছর চলছে। এছাড়া বিএসইসি পুঁজিবাজার স্থিতিশীল না করে বিদেশে রোড শো করছে। বিদেশে রোড শো না করে দেশি বড় বড় কোম্পানিকে কিভাবে পুঁজিবাজারে অন্তভুক্ত করা যায় সে বিষয় দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

এম সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী কাজী হোসাইন আলী বলেন, বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীরা আস্থা নাই বললে চলে । কারণ পুঁজিবাজারে চলছে হরিলুট। ভালো মৌল ভিত্তি শেয়ার ফ্লোর প্রাইস থাকলেও নো ডিভিডেন্ডের কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছে। এছাড়া পুঁজিবাজারে যারা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করেছেন তাদেরও প্রায় নব্বই শতাংশ মূলধন নাই হয়ে গেছে। এতে করে আস্থার সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে।

ডিএসইর তথ্য মতে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪.৯৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২৭৪.৭১ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ২.৩১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে একহাজার ৩৬০.৪২ পয়েন্টে। তবে ডিএসই-৩০ সূচক ০.১০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৩৩.৯৭ পয়েন্টে।

ডিএসইতে ৩০৯টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫০টির বা ১৬.১৮ শতাংশের দর বেড়েছে। শেয়ার দর কমেছে ৯২টির বা ২৯.৭৭ শতাংশের এবং ১৬৭টির বা ৫৪.০৫ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। ডিএসইতে আজ ৩৭২ কোটি ২৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১৫০ কোটি ৬১ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ৫২২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

এদিন অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৬.৯৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৯৬.৩৯ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসসিএক্স ৭.৪৫ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১১.২৮ পয়েন্ট, সিএসই-৫০ সূচক ০.৬৮ পয়েন্ট এবং সিএসআই ০.৮৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১ হাজার ১১৯.৪৮ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৩৯০.২৪ পয়েন্টে, একহাজার ৩০৯.৯৪ পয়েন্টে এবং একহাজার ১৭১.৩৪ পয়েন্টে।

আজ সিএসইতে ১৩৬টি প্রতিষ্ঠানে লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৬টির, কমেছে ৩৬টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের। আজ সিএসইতে ৫ কোটি ০৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।