শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের দরপতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে আগের কার্যদিবস থেকে আজ লেনদেনের পরিমান কমেছে। তবে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর পতনের তুলনায় উত্থান বেশি হয়েছে। মুলত শেয়ার বিক্রির চাপে আজ সূচকের বড় দরপতন হয়েছে। দিনভর সূচক ওঠানামা শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কমেছে ৭ দশমিক ৭১ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমেছে ৭ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট।

এদিকে পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে ভালো মানের কোম্পানিগুলোর শেয়ারে ঋণসুবিধা বাড়িয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সংস্থাটির নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানি টানা তিন বছর ধরে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত রয়েছে, সেগুলোর শেয়ারে ৫০ মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) পর্যন্ত ঋণসুবিধা মিলবে। আগে এসব শেয়ারে ৪০ পিই রেশিও পর্যন্ত ঋণসুবিধা মিলত। তবে যেসব কোম্পানির শেয়ার কেনায় বাড়তি ঋণসুবিধা পাওয়া যাবে, সেগুলোর ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন হতে হবে ৩০ কোটি টাকা।

মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ব্যাখ্যা করা যাক। ধরুন, কোনো একটি কোম্পানির শেয়ারের বাজারমূল্য ১০০ টাকা। আর ওই কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ১০ টাকা। তাহলে কোম্পানিটির মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) দাঁড়াবে ১০। শেয়ারের বাজারমূল্যকে আয় দিয়ে ভাগ করে মূল্য আয় অনুপাত হিসাব করা হয়।

বিএসইসির নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫০০ টাকা অতিক্রম না করা পর্যন্ত তা কেনার জন্য ঋণসুবিধা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। এত দিন এই ঋণসুবিধা ৪০ পিই পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। তাতে শেয়ারের দাম ৪০০ টাকা অতিক্রম না করা পর্যন্ত ঋণসুবিধা পেতেন বিনিয়োগকারীরা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ভালো মানের ৩০ কোম্পানি নিয়ে ডিএস-৩০ নামে আলাদা একটি সূচক রয়েছে। এ সূচকে অন্তর্ভুক্ত ৩০টি কোম্পানি শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি বা ব্লু চিপ শেয়ার হিসেবে পরিচিত। বিএসইসি ঋণসুবিধা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ভালো কোম্পানিগুলোর শেয়ারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, এমনটাই প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু বাস্তবে ঘটছে উল্টোটা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সোমবার ডিএসইতে ৭৫৯ কোটি ৫১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগেরদিন রবিবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৮৪৬ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭ দশমিক ৭১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৬১ দশমিক ৬২ পয়েন্টে।

এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৭ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক দশমিক ৬১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ১৯৬ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৬৭ দশমিক ৫৩ পয়েন্টে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬৪টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৭৪টি এবং কমেছে ৬৫টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ২২৫টির।

অপরদিকে সিএসইতে সোমবার লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ১০ লাখ টাকা শেয়ার। আগেরদিন বুধবার ৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৯০টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৫৩টি, কমেছে ৪৪টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৯৩টির।

এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৭ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৭৪ দশমিক ৮৭ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ১ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৯ দশমিক ২৭ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স ১ দশমিক ৬০ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ২ দশমিক ৬০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩১৯ দশমিক ৩৮ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৪৯১ দশমিক ৬২ পয়েন্টে, ১১ হাজার ৬৩ দশমিক ১৩ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৬৭ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে।