শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের চেয়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে অস্থিরতা অনেক কম। তাই বর্তমান পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উত্তম সময়। ভালো মৌল ভিত্তি শেয়ারে বিনিয়োগ করে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। কারণ বাংলাদেশের পুঁজিবাজার ভালো পারফরমেন্স করছে।

তেমনি বাংলাদেশে বিনিয়োগে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ অপেক্ষা করছে। তাই এখনই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে ব্যবসা করার সঠিক সময়। সেজন্য জাপানে অবস্থানরত প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি।

জাপানের রাজধানী টোকিওতে অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলন ‘ দ্যা রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড জাপান’ এ উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে তিনি এ কথা বলেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারও দারুণ ভূমিকা রাখছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে কম অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার ভালো পারফরমেন্স করেছে। এ বছর আমাদের পুঁজিবাজারে ৭৪.৬০ বিলিয়ন ডলার মূলধন বিনিয়োগ করা হয়েছে। আর সে কারণেই ২০২০ সালে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার সর্বোচ্চ রিটার্ন প্রদান করে বলে এএফসি দ্বারা স্বীকৃতি পেয়েছি।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, এশিয়ান ফ্রন্টিয়ার ক্যাপিটালের রিপোর্ট অনুসারে, ২০২০ সালে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার ছিল সর্বোচ্চ রিটার্ন প্রদানকারী বাজার। বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী নাকাতানি শিনিছি।

বিএসইসি ও বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করে। এই সম্মেলনের সহ-আয়োজক জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) এবং জাপান-বাংলাদেশ কাউন্সিল কমিটি ফর কমার্শিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (জেবিসিসিইসি)।

উক্ত সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাপান চেম্বার অব কমার্স (জেসিসিআই) এর প্রেসিডেন্ট কোবায়াশি কেন, জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরি এবং জেট্রোর প্রেসিডেন্ট ইশিগুরো নরিহিকো। সম্মেলনে মূল প্রবন্ধে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ জাপানে সাহায্য বা ঋণের জন্য আসেনি, এসেছে বিনিয়োগের জন্য।

তিনি বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগের বিভিন্ন সম্ভাবনার দিকগিলো তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির রেকর্ড রয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ একটি ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে উন্নীত হবে। এই অর্থনীতির রয়েছে যে কোনো সংকট মোকাবেলার সক্ষমতা। এই দেশে বিনিয়োগ করলে সহজেই মুনাফাসহ বিনিয়োগ প্রত্যাবাসন করা যায়। এখানে সরকারের বিশেষ মনিটরিং রয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের দেওয়া হয় আর্থিক ও নীতিগত প্রণোদনা।

তিনি বলেন, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক এক গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ভ্যালু ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। তৈরি পোশাকসহ বেশ কিছু খাতে অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বের চীর্ষ ১০টি পরিবেশসম্মত পোশাক কারখানার ৭টিই বাংলাদেশে অবস্থিত।বিনিয়োগের সম্ভাবনার দিক থেকে এখন বাংলাদেশ ভারত, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়াসহ অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে। জাপানি বিনিয়োগকারীদের উচিত এখানে বিনিয়োগের সুযোগকে কাজে লাগানো।

রোড শোতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনসহ বিএসইসির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।