শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন কোন ওষুধে পুঁজিবাজারে কাজ হচ্ছে না। পুঁজিবাজার স্থিতিশীল না হওয়ার মূল রহস্য আস্থা সংকট। মুলত দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজার একটানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদৈর মাঝে বাজারের প্রতি কোন আস্থা নেই। যার ফলে বিনিয়োগকারী সহ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা হাত গুটিয়ে বসে আসে।

পুঁজিবাজারের পতন রোধে রেগুলেটর বেঁধে দিলো শেয়ার দর নামার ক্ষেত্রে সীমা (ফ্লোর প্রাইস)। এটা বেঁধে দিলে শেয়ারবাজারে পতন বন্ধ হবে, এমন ধারন তাদের (রেগুলেটর)। কিন্তু ভূল, ফ্লোর প্রাইস আরোপের পরদিন সেই একই পতন পুঁজিবাজারে। এই পতন থেকে বাঁচতে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা মোটেও ঠিক হয়নি বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলেন, পুঁজিবাজারে চাপ দিয়ে ভাল করা যাবে না। স্বাভাবিক গতিতেও আনা সম্ভব না। পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক গতি ফেরাতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) নতুন কৌশল বের করতে হবে। কারন পুঁজিবাজার একটা নিয়মের মধ্যে চলে। তাকে সেই নিয়মে চলতে দেয়া জরুরী। জোর করে কোন কিছু চাপিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক পুঁজিবাজার আনা সম্ভব না।

এদিকে নতুন করে ১৬৯টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে ফ্লোর প্রাইস আরোপের প্রথমদিন পুঁজিবাজারে আবারও দরপতন হওয়ায় ক্ষোভ বিরাজ করছে বিনিয়োগকারীদের মাঝে। এদিন সূচক, লেনদেন এবং অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। এর ফলে গত সোম ও মঙ্গলবার দুদিন উত্থানের পর বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা দুদিন আবারও দরপতন হলো। শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রি চাপে বৃহস্পতিবার দিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কমেছে দশমিক ৯১ পয়েন্ট। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কমেছে ৫৩ পয়েন্ট।

ডিএসইর তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার দিনভর সূচক উঠানামার মধ্যদিয়ে ডিএসইতে ৩০৯টি প্রতিষ্ঠানের ৫ কোটি ৬৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৭১টি শেয়ার ও ইউনিট কেনা-বেচা হয়েছে। এ কেনা-বেচা থেকে মোট লেনদেন হয়েছে ৪২৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এর আগের দিন বুধবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৪৫২ কোটি ৪০ লাখ ২ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৭২টি কোম্পানির শেয়ারের, বিপরীতে কমেছে ৮৮টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে দশমিক ৯৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২১৩ পয়েন্টে। ডিএসইএস শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৪৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২১৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক আগের দিনের সিএএসপিআই সূচক ৫৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ২৮২পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকার শেয়ার।

এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৬ কোটি ৪৯ লাখ ২৫ হাজার টাকার শেয়ার। এ বাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৮টির দাম বেড়েছে, বিপরীতে কমেছে ৩৭টির ও ৪৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।