শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: টানা দরপতনের পর ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় মধ্যে দিয়ে লেনদেন হয়েছে। এদিন উভয় পুঁজিবাজারে সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেন। তবে কমেছে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

এদিকে বর্তমান কমিশনের সময়ে পুঁজিবাজার সবচেয়ে বেশি খারাপ সময় পার চলতি বছরে। এ বছরজুড়েই নিন্মমূখী ছিল পুঁজিবাজার। তবে আশা জাগিয়ে বছর শেষ করেছে দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এতে করে নতুন বছরে স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের প্রত্যাশা করছেন বিশ্লেষকরা। তেমনি নতুন বছরে পুঁজিবাজার ভালো হবে বলে প্রত্যাশা করছেন তাদের।

বিশ্লেষকরা বলছেন, টানা পতনে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্থ। তবে বছরের শেষ দিকে এসে বাজার কিছুটা উর্ধ্বমূখী ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাজারের এমন উর্ধ্বমূখী প্রবণতা বজায় থাকলে নতুন বছরে বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজার থেকে ভালো কিছু রিটার্ন পাবে। যা বিনিয়োগকারীরাও প্রত্যাশা করছেন।

স্টক বন্ডের বিনিয়োগকারী শেখ আরিফুর রহমান বলেন, টানা দরপতনে আমাদের পুঁজি শেষের পথে। কয়েকবার এভারেজ করেও লোকসান কমাতে পারেনি। তাই নতুন বছরে স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের প্রত্যাশা করছি। এ ব্যাপারে সরকারসহ বিএসইসি সঠিক সিদ্ধান্ত নিবে।

বিডিবিএল ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেডের বিনিয়োগকারী ফরিদ হোসেন বলেন, ২০২২ সালের পুরো বছরটা পুঁজিবাজার অস্থিতিশীল ছিলো। আশা করি নতুন বছর বাজার ভালো হবে। কারণ বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারী সহ সংশ্লিষ্টরা উদ্বিগ্ন।

মশিউর সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী আকরাম হোসেন বলেন, ২০২২ সালটা ছিলো পুঁজি হারানোর বছর। আশা করি ২০২৩ সালে হারানো পুঁজি ফিরে পাবে এমন প্রত্যাশা বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্টদের।

এদিকে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে ৩৪ পয়েন্ট। এর ফলে সোম ও মঙ্গলবার দরপতনের পর বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা দুদিন পুঁজিবাজারে উত্থান হলো। বৃহস্পতিবার ৩৫৪টি প্রতিষ্ঠানের মাত্র ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯২৬টি শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। তাতে লেনদেন হয়েছে ৩৪৫ কোটি ৭১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৫৮ কোটি ২২ লাখ টাকা।

জানা গেছে, আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০.৯৯ পয়েন্ট বা ০.১৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২০৬.৮১ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৩.১৩ পয়েন্ট বা ০.২৩ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১.১০ পয়েন্ট বা ০.০৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৫৮.৮৩ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ১৯৫.৩০ পয়েন্টে।

ডিএসইতে আজ ৩৪৫ কোটি ৭১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৮৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বেশি। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ২৫৮ কোটি ২২ লাখ টাকার। ডিএসইতে আজ ৩৫৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৬০টির বা ১৬.৯৫ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ১০৭টির বা ৩০.২৩ শতাংশের এবং ১৮৭টির বা ৫২.৮২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩৩.১১ পয়েন্ট বা ০.১৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩২৭.৩২ পয়েন্টে। সিএসইতে আজ ১৫৮টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৫টির দর বেড়েছে, কমেছে ৩০টির আর ৯৩টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৩৪ কোটি ০২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।