শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজার উন্নয়নের নামে একের পর প্রহসন চলছে। এই বাজারের পক্ষে কথা বলার মতো কেউ নেই। লুটপাট করতে করতে এই বাজারকে শেষ করে ফেলল। অথচ লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কেউ নেই বলে মন্তব্য করেছেন মডার্ণ সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বহী (সিইও) খুজিস্তা নূরে-ই নাহারীন মুন্নী। আজ বুধবার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক ফেইজে এমন মন্তব্য করে স্ট্যাটাস তিনি একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

স্ট্যাটাসে তিনি পুঁজিবাজার কেন্দ্রীক বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সমালোচনাও করেন। তিনি বলেন, সবাই নেতা হতে চান অথচ দুঃসময়ে মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকেন। কারো মুখে কোন রা নেই। সবাই বোবা, কালা এবং অন্ধ। নেতা হওয়ার জন্য কতোই না কসরৎ! কতো ষড়যন্ত্র!

পাঠকদের জন্য খুজিস্তা নূরে-ই নাহারীন মুন্নীর সম্পূর্ণ স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো: ‘পুঁজি বাজার কবে সম্পূর্ণভাবে ক্রেতা শূন্য হবে সেই অপেক্ষায় আছি। মার্কেট উন্নয়নের নামে একের পর এক প্রহসন । একজন মানুষ নেই যে কিনা বাজারটার পক্ষে কথা বলবে।সবার সামনেই লুটপাট করতে করতে মার্কেট টাকে শেষ করে ফেলল, অথচ প্রতিবাদ করার কেউ নেই, বুদ্ধি দিয়ে সংস্কার এবং সাহায্য করারও কেউ নেই ।সবাই যার যার আখের গোছাতে ব্যস্ত। এইবার খা বেশী কইরা খা।

সবাই নেতা হতে চান অথচ দুঃসময়ে মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকেন।কারো মুখে কোন রা নেই। সবাই বোবা, কালা এবং অন্ধ। নেতা হওয়ার জন্য কতোই না কসরৎ! কতো ষড়যন্ত্র! সবই কি এই চুপ করে বসে থাকার জন্য?’

খুজিস্তা নূরে-ই নাহারীন (মুন্নী) মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে এ মন্তব্য করেছি। একজন বিনিয়োগকারী হিসেবে আমার এই মন্তব্য। এটা শুধু আমার কথা নয়, এটা লাখো বিনিয়োগকারীদের প্রাণের কথা।

পুঁজিবাজারে আস্থার সংকট রয়েছে। এই সংকট দূর করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে। কারণ অনেক বিনিয়োগকারীদের কাছে টাকা থাকলেও তারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য আস্থা পাচ্ছেন না। বিনিয়োগকারীরা যাতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয় সেই আলোকে পুঁজিবাজারে আস্থা তৈরী করতে হবে।

খুজিস্তা নূরে-ই নাহারীন মুন্নী বলেন, বর্তমান অবস্থা থেকে পুঁজিবাজারকে উন্নয়নের জন্য সর্বপ্রথম সকল প্রকারের আইপিও বন্ধ করতে হবে। কারণ বর্তমানে পুঁজিবাজারে তারল্য সংকট রয়েছে। আর নতুন আইপিও শেয়ারবাজারে আসলে বাজার থেকে তারল্য কমে যায়। আইপিও বন্ধ করলে পুঁজিবাজার থেকে তারল্য বের হতে পারবে না। বাজারের টাকা বাজারেই থেকে যাবে।

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারে তার‌ল্য বৃদ্ধি করতে হবে। কোথা থেকে আসবে বা কিভাবে আসবে সেটা আমি জানিনা, তবে শেয়ারবাজারে তারল্য বৃদ্ধি করলেই শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে। আর পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ালে সাইড লাইনে থাকা বিনিয়োগকারীরা আবারও শেয়ারবাজারে সক্রিয় হবে। এখন প্রয়োজন শেয়ারবাজারে আস্থা তৈরী করা। আস্থার সাথে তারল্য বৃদ্ধি ফেলে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে।

এছাড়াও ডিএসই ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) সমালোচনা করে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের এই অবস্থার উন্নয়নের জন্য ডিবিএ থেকে এখন পযন্ত কোন প্রকার উদ্বোগ গ্রহন করা হয়নি। অথচ ব্রোকারগুলোর খুব খারাপ অবস্থা। আমরা আমাদের শেয়ারগুলো বিক্রি করতে পারছিনা। অথচ ডিবিএ’র পদ নিয়ে বসে আছে নেতারা। কোন প্রকার মাথা ব্যথাই নেই তাদের।

ফ্লোর প্রাইস নিয়ে তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারের বর্তমান যে অবস্থা, কোন ভাবেই ফ্লোর প্রাইস তুলা যাবে না। কারণ ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে একদিন সূচক পরবে ১০০০ পয়েন্টের বেশি। কারণ যার কাছে যা আছে তাই বিক্রি করে টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করবে। তাই ফ্লোর প্রাইস না তুলে শেয়ারবাজারের কিভাবে উন্নয়ন করা যায় সে বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থ পদক্ষেপ নিলে অন্ততপক্ষে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা রক্ষা পাবে’