শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দুই খাতের শেয়ারে ভর করে সূচকের কিছুটা উত্থান হয়েছে। এর ফলে টানা তিন কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হলো। এদিকে পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং ও বিমা খাতের শেয়ারের দাম বাড়ায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সূচক বেড়েছে ১১ পয়েন্ট। দিনভর শেয়ার বিক্রির চাপের পরও এই দিনে লেনদেন, সূচক ও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টানা তিন কর্মদিবস সূচকে পয়েন্ট যোগ হলো। সেই সঙ্গে দিনের চেয়ে বেড়ে ছয় কর্মদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ হলো লেনদেনও। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রভাব শুরু হওয়া পতন থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপের কারণে তিন সপ্তাহ ধরে ফের সংশোধন চলছে পুঁজিবাজারে।

১৫ কর্মদিবস আগে ৯ নভেম্বর সর্বশেষ হাজার কোটির বেশি লেনদেন হয়েছিল ডিএসইতে। এরপরে তিন কর্মদিবস ৭০০ কোটি টাকার ঘরে লেনদেন হলেও ক্রমেই তা তলানিতে ঠেকে। ৮ কর্মদিবসে পরে ২১ নভেম্বর সর্বপ্রথম লেনদেন ৩০০ কোটির ঘরে নেমে আসে। হাতবদল হয় ৩৫১ কোটি ৯০ লাখ ২৩ হাজার টাকা।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে টানা উত্থানের কোন বিকল্প নেই। কারণে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইসের কাছাকাছি অবস্থান করছে। এ অবস্থায় যে সকল কোম্পানিগুলো ভালো ডিভিডেন্ড ও ইপিএস দেখিয়েছে সেকল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে লাভবান হয়ো সম্ভব বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক এম সিকিউরিটিজের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সাম্প্রতিক টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মাঝে এক ধরনের অজানা আতঙ্ক ছিল। ফলে গত কয়েক দিনের দরপতনে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীদের বড় রকমের লোকসান হয়েছে। যাদের মার্জিনে ঋণে বিনিয়োগ ছিল তাদের ফোর্স সেল হয়েছে।

ফলে মার্জিনে ঋণের বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগে যেতে সাহস পাচ্ছেন না। তাই বর্তমান বাজারের স্বার্থে টানা উত্থানের বিকল্প নেই। স্থিতিশীল বাজার সৃষ্টি হতে টানা পুঁজিবাজার উত্থান থাকতে হবে। এ অবস্থায় বিনিয়োগ করলে লোকসানের সম্ভাবনা নেই বলে তিনি মনে করেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯.৪৩ পয়েন্ট বা ০.১৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২৪৫.৩৭ পয়েন্টে।

ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ০.১৩ পয়েন্ট বা ০.০০৯ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১.৮০ পয়েন্ট বা ০.০৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৭০.৩১ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২১৬.১৩ পয়েন্টে। ডিএসইতে বৃহস্পতিবার ৪৮৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৫৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বেশি। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ৪৪৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকার। ডিএসইতে ৩১৮ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৬১টির বা ১৯.১৮ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ২৩টির বা ৭.২৩ শতাংশের এবং ২৩৪টির বা ৭৩.৫৯ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১১.১১ পয়েন্ট বা ০.০৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪১৯.৬২ পয়েন্টে।

সিএসইতে ১৬১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৪টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৩টির আর ১১৪টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৭ কোটি ০২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।