শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পতনের শেষ বিন্দুতে রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। অর্থাৎ পুরো পুঁজিবাজার একটি সাপোর্ট লেভেলে অবস্থান করছে। এই অবস্থায় পতনের আর কোনো সুযোগ নেই। বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে গত ২৮ জুলাই ২০২২ পতন ঠেকাতে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় বারের মতো ফ্লোর প্রাইস বা দর পতনের সর্বনিম্ন সীমা বেঁধে দেয়া হয়।

এর আগে ২০২০ সালে দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে শেয়ারবাজারে পতন ঠেকাতে ওই বছরের ১৯ মার্চ ২০২২ কমিশন প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দর বেঁধে দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়।

সূচকের উত্থান-পতন পর্যালোচনা করলেদেখা যায়, ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর প্রধান সূচক ৪৭৬৮ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। যা করোনার কারণে ৮ মার্চ কমে দাঁড়ায় ৪২৮৭ পয়েন্ট।সেদিন দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার খবরে ৯ মার্চ একদিনেই ২৭৯ পয়েন্ট পতন হয়। এরপর ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে প্রথম রোগী মারা যাওয়ার খবরে সূচক ৩৬০৪ পয়েন্টে নেমে আসে। আতঙ্কিত পুঁজিবাজারের এমন পতন ঠেকাতে ১৯ মার্চ ২০২০ পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়।

এর পর করোনা মহামারির মাঝেই নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে শেয়ারবাজার এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একপর্যায়ে সূচক উঠে যায় ৭৪০০ পয়েন্টে।

এরই মধ্যে বেজে উঠে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামা। এর ঢেউ আছড়ে পড়ে পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্ত ছাড়িয়ে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর এর শেষ সপ্তাহ থেকেই বাজার পিছুটান দিতে শুরু করে। যে আশা নিয়ে বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরা ২০১০ সালের মহাধসের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার যে স্বপ্ন বুনন শুরু করেছিল, তা ফের উবে যায়।

রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কট থেকে তৈরি হয়, খাদ্য সঙ্কট, জ্বালানি সঙ্কট, ডলার সঙ্কট। ইত্যাদি সঙ্কটের প্রেক্ষিতে ডালপালা বিস্তার করে দুর্ভিক্ষের। সঙ্কট থেকে বাদ যায় না শেয়ারবাজার। বাজারকে বাঁচাতে দূরদর্শী চিন্তা থেকেই বর্তমান কমিশন গত ২৮ জুলাই ২০২২ দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে।

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৯৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭৫টি প্রতিষ্ঠান ফ্লোর প্রাইসে চলে এসেছে। ডিএসইর সদ্য বিদায়ী সাপ্তাহিক (২০-২৪ নভেম্বর ২০২২) প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, আর মাত্র ৮০টি প্রতিষ্ঠান ফ্লোর প্রাইসের একদম কাছাকাছি লেনদেন হচ্ছে, আর ২৩টি প্রতিষ্ঠানের দর কমেছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসই এক্স সূচক কমেছে মাত্র ১০.২৪ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহে ডিএসই এক্স সূচক কমেছিল ৩৬.০৬ পয়েন্ট। অর্থাৎ সূচক পতনের ধাক্কা আর নেই, ফলশ্রুতিতে আজ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস সূচকের উত্থান হয় ১৭.১৭ পয়েন্ট।

যেহেতু অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর ফ্লোর প্রাইসে বা তার কাছাকাছি তাই শেয়ারবাজারে বড় কোনো পতনের আর সুযোগ নেই। এখন শুধু ঘুরে দাঁড়ানোর পালা, প্রয়োজন শুধু বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য্য।