শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, আমরা চাই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ না করে মানুষ পুঁজিবাজারে আসুক। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করুক, এখানে মুনাফা বেশি। সোমবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কার্যালয়ে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিএসইসি অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।

গভর্নর বলেন, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করতে আমরা সুদহার কমিয়েছি। বিভিন্ন শর্ত দিয়েছি। সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগের বিধান করেছি। এতকিছু করেছি যাতে মানুষ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কম করে।

গর্ভনর বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটের দুইটা পার্ট। এর মধ্যে একটা ইক্যুইটি মার্কেট আর একটা ডেপথ মার্কেট। ইক্যুইটি মার্কেটই হলো শেয়ার মার্কেট। বাংলাদেশে এই শেয়ার মার্কেটই ডেভলপ করেছে। শেয়ার মার্কেটেরে আরেকটা অংশ যেটা আসলে বড় হওয়া উচিত সেটা হলো বন্ড মার্কেট। সেটা কিন্তু খুব বেশি গড়ে উঠেনি। সেটার সেকেন্ডারি মার্কেট আসলে ততটা ভালো কাজ করছে না। বন্ড মার্কেটকে বড় করতে যে সাপোর্ট দরকার সেটা গভর্নর হওয়ার পর বেশি অনুভব করলাম।

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরে বড় সমস্যা নন পার্ফমিং লোন। নন পার্ফমিং লোন হওয়ার অনেক কারণে আছে। সেটার মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো ব্যাংকগুলো যে ডিপোজিট জমা নেয় এটা শর্টটার্ম ডিপোজিট নেয়। ব্যাংক শর্টটার্ম ডিপোজিট নিয়ে লংটার্ম ইনভেস্ট করে। সুতারাং এখনে একটা ম্যাচিউরিটি ইসম্যাস আছে। যেই কারণে ব্যাংকের নন পার্ফমিং লোন বেশি হওয়ার এটা একটা কারণ। শটটার্ম ডিপোজিট নিয়ে লংটার্ম ইনভেস্ট করছে। যখন এটা ফেরত দেওয়ার কথা তখন ফেরত দিতে পারছে না।

গভর্নর বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ যেমন ভারত, থাইল্যান্ড ও মালয়শিয়াতে উদ্যোক্তা ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে পুঁজি তুলে। অন্যান্য প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে লোন নেয়। আর আমদের দেশে হচ্ছে ঠিক এর উল্টো। সবাই ব্যাংক থেকেই লোন নিচ্ছে। কাজেই এখনে যদি লোন পরিশোধে কোয়ার্টার মিস করেন তাহলেই তিনি ডিফল্টার হয়ে যাচ্ছেন। কাজেই আমি মনে করে বন্ড মার্কেটকে যদি ডেভলপ করতে পারি। আরো ভালো করতে পারি তাহলে সবাই বন্ড মার্কেটে যাবে। সেখান থেকে তারা টাকা তুলবে। আর ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসা করবে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।

আজ থেকে শুরু হওয়া বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ চলবে আগামী ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত। সপ্তাহব্যাপী এ আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা থেকে শুরু করে কয়েকজন মন্ত্রী অংশ নেবেন বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, বিশ্ব পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রকদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনসের (আইওএসসিও) সদস্য লাভ করার পর বাংলাদেশ ২০১৭ সাল থেকে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ পালন করে আসছে।