শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর ফের উৎপাদনে ফিরেছে। প্রাথমিকভাবে কোম্পানিটি পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করেছে। পরীক্ষামূলক উৎপাদন শেষে শিগগির পরিপূর্ণ উৎপাদন শুরু করবে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম আজ শনিবার (১৩ আগস্ট) চট্টগ্রামে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের পরীক্ষামূলক উৎপাদন উদ্বোধন করেন। বস্ত্র খাতের কোম্পানি সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল ২০১৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ার ছেড়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার তিনি বছর না ঘুরতেই ২০১৭ সালে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপভিত্তিক তৈরি পোশাক ক্রেতাদের সংগঠন অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের চাহিদা অনুযায়ী কারখানা সংস্কারের কথা বলে ২০১৭ সালের ১ মে উৎপাদন বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ।

এরপর আর উৎপাদনে না ফেরায় অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন গত বছর কোম্পানিটিকে পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেয়। তারই অংশ হিসেবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে আলিফ গ্রুপের পক্ষ থেকে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল অধিগ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। আলিফ গ্রুপের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে অক্টোবরে বিএসইসি কিছু শর্ত দিয়ে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল অধিগ্রহণে সম্মতি দেয়।

বিএসইসির অনুমোদন পেয়ে চলতি বছরে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলকে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করে আলিফ গ্রুপ। পুরাতন মেশিন সংস্কারের পাশাপাশি কিছু নতুন মেশিন স্থাপনের মাধ্যমে কোম্পানিটির পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করেছে।

দীর্ঘ বন্ধ থাকা কোম্পানির পরীক্ষামূলক উৎপাদন উদ্বোধন করে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দেশের সব থেকে বড় সমস্যা কর্মসংস্থান। ব্যাংকের দুইশ কোটি টাকা ঋণসহ হঠাৎ করে একটি কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেলে ব্যাংক বিপদে পড়ে। একই সঙ্গে আমাদের সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও বিপদে পড়েন। আর দুই-তিন হাজার লোক বেকার হয়ে যায়। এখন ওনারা (আলিফ গ্রুপ) দায়িত্ব নিয়েছেন, আশা করা যায় আবার নতুন করে কর্মসংস্থান হবে। এক্সপোর্ট হবে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের গার্মেন্টস সেক্টরের গ্রোথ অনেক হাই। এখানে ক্যাপাসিটি বাড়ানোটা খুবই দরকার। এখানে ওনাদের উৎপাদনের মাধ্যমে নতুন যে ডিমান্ড সৃষ্টি হচ্ছে তা হয়তো ফুলফিল হবে। ব্যাংকও তাদের আটকে যাওয়া অর্থ ফেরত পাবে। ওনারা (আলিফ গ্রুপ) এখন ব্যাংকের আটকে যাওয়া ফান্ড গ্রাজুয়ালি পরিশোধ করে রিলিজ করবেন। যেসব বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করে আটকে গিয়েছিলেন তারাও সুবিধা পাবেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান কমিশনের আমলে একটি কোম্পানিও বন্ধ হয়নি। তিনি বলেন, আগে বিএসইসিতে কোনো তদন্ত বিভাগ ছিল না। আমরা তদন্ত বিভাগ চালু করেছি। এখন ফৌজদারি মামলা দায়ের করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আগে এটা ছিল না।

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আগে একদিনে ৬৫টি কোম্পানি ওটিসিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেগুলোকে এখন আমরা দেখছি অ্যাসেট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সেগুলো একটা একটা করে আমরা করছি এবং ভালো ফলাফল পাচ্ছি। খুব ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে দুই- চারটা কোম্পানি এরইমধ্যে উৎপাদনে চলে গেছে। আমার হিসেবে আমরা যদি ৫০-৬০টা কোম্পানি চালু করতে পারি তাহলে ২০-৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।