শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক টানা দরপতনে শতকরা ৮৫ শতাংশ বিনিয়োগকারী বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হন। গত ৮ মাসের দরপতনে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি হারিয়ে নি:স্ব হওয়ার পথে। অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছেন পুঁজি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন বক্তব্যে বাকরদ্ধ সাধারন বিনিয়োগকারীরা। এমন অবস্থায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পুঁজি হারিয়ে পাগলপ্রায় সাবেক এক সেনা সদস্য।

মুলত পেনশনের টাকা ও ঋণ নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য কাওছার আহমেদ। পুঁজিবাজারে সবমিলিয়ে ৬৫ লাখ টাকা খুইয়েছেন তিনি। এখন প্রতি মাসে ঋণের প্রায় ৬০ হাজার টাকার কিস্তি পরিশোধ করতে হচ্ছে তাকে। এ নিয়ে পাগলপ্রায় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারী সাবেক এ সেনাসদস্য। লোকসান ও ঋণের যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে সম্প্রতি তিনি নিয়মিত ঘুমের ওষুধ সেবন করছেন। ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

তবে উপায়ান্তর না পেয়ে অসুস্থ শরীর নিয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একাই অবস্থান কর্মসূচি করেন কাওছার আহমেদ। কর্মসূচি থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান। কর্মসূচি চলাকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন কাওছার। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠান।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে নিঃস্ব কাওছার আহমেদ জানান, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান তিনি। পেনশনের সব অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেন। পাশাপাশি স্বজনদের কাছ থেকে ধার ও ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেন। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা প্রায় সব অর্থ খোয়ান তিনি।

তিনি আরও জানান, বিভিন্নজনের কাছ থেকে তিনি প্রায় ৪০ লাখ টাকা ধার নিয়েছেন। সেই টাকার সুদ বাড়ছে। ঋণ পরিশোধে প্রতি মাসে ৬০ হাজার টাকা কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। শেয়ারবাজারে ৬৫ লাখ টাকা খুইয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। লোকসান ও ঋণের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে ঘুমের ওষুধ সেবনে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছেন। এভাবে তিনি আত্মহননের পথও বেছে নিয়েছেন। দুর্দিনে তিনি ঋণের বোঝা থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান।

জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকায় দায়িত্বরত শাহবাগ থানার পেট্রোল ইন্সপেক্টর আবুল বাশার বলেন, ‘প্রেস ক্লাব চত্বর থেকে অসুস্থ অবস্থায় কাওছার নামে একজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার কাছ থেকে ১০ পাতা ঘুমের ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’