শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের বড় দরপতন হয়েছে। এসই প্রধান সূচক কমেছে ৩০.১০ পয়েন্ট। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা  বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে সমন্বয়হীনতার বিষয়টি সামনে আসার পর পুঁজিবাজারে যে ছন্দপতন দেখা দিয়েছিল, সেটি এখন পরিণত হয়েছে ধসে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর দিন থেকে বিশ্বের প্রায় সব শেয়ারবাজারেই ধস দেখা দেয়। পরে বিশ্বের প্রায় বাজারই ঘুরে দাঁড়ায়। কিন্তু বাংলাদেশের শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। টানা দরপতনের মধ্যে বিএসইসিও বাজারে তারল্য বাড়াতে নানা চেষ্টা করে। কিন্তু সেই চেষ্টার তেমন প্রভাব পড়ছে, এমন কোনো প্রমাণ দেখা যায় না।

বরং লেনদেন তলানিতে নেমে আসায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দানা বেঁধে উঠে। তার লোকসান দিয়েও শেয়ার বিক্রি করতে পারছে না। এই পতনের তোড়ে বাদ যাচ্ছে না মৌলভিত্তির শেয়ারও। বরং দুর্বল কোম্পানির চেয়ে সবল কোম্পানিরই শেয়ার দরে পতন ঝরাচ্ছে বেশি। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন সীমা স্পর্শ করে দিনভর ক্রেতাশূন্য অবস্থায় পড়ে থেকেছে দুই শেয়ার।

সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন সীমা স্পর্শ করে আজ ক্রেতাশূন্য অবস্থায় মৌলভিত্তির দুই শেয়ার হলো বেক্সিমকো ফার্মা এবং বিডি ফাইন্যান্স। আজ কোম্পানি দুটির শেয়ার ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষে অবস্থান করছে।

যদিও কোম্পানি দুটি বিনিয়োগকারীদের কখনও ঠকায়নি। প্রতিবছর ভালো ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে। শেয়ার প্রতি আয়ও বেশ ভালো। তারমধ্যে বেক্সিমকো ফার্মা মৌলভিত্তি শেয়ারের প্রথম কাতারেতো রয়েছেই। আর বিডি ফাইন্যান্স সেই কাতারের শেষদিকে হলেও রয়েছে।

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস (জুলাই-ডিসেম্বর’২১) সমাপ্ত অর্ধবার্ষিকে শেয়ার প্রতি আয় করেছে ৭ টাকা ১২ পয়সা। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য ৮৬ টাকা ৬৫ পয়সা। সর্বশেষ মূল্য অনুযায়ী এর পিই রেশিও ১১.৩৬ পয়েন্ট।

উপরন্তু কোম্পানিটির রিলেশনাল স্ট্রেন্থ ইনডেক্স (আরএসআই) ২০.১২ পয়েন্ট যা ক্রয় নির্দেশক বার্তা দিচ্ছে। এমন অবস্থায় এই কোম্পানিটি ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে যা বিনিয়োগকারীরা সাধারণভাবে মেনে নিতে পারছে না।

অপর মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানি বিডি ফাইন্যান্স (জানুয়ারি-ডিসেম্বর’২১) সমাপ্ত অর্থবছরে ৬ শতাংশ ক্যাশ এবং ৬ শতাংশ স্টক সহ মোট ১২ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। বছর শেষে শেয়ার প্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৪৪ পয়সা। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য ১৭ টাকা ৭৩ পয়সা। সর্বশেষ মূল্য অনুযায়ী এর পিই রেশিও ২৭.২২ পয়েন্ট।

উপরন্তু কোম্পানিটির রিলেশনাল স্ট্রেন্থ ইনডেক্স (আরএসআই) ৩০.৫৭ পয়েন্ট যা ক্রয় নির্দেশক বার্তা দিচ্ছে। এমনবস্থায় এই কোম্পানিটি ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে যা কোনোক্রমেই বিনিয়োগকারীরা মেনে নিতে পারছে না। কিন্তু কিছু করার নেই। কারণ ঝড় যখন আসে, তখন সবকিছু যেন একাকার হয়ে যায়।