শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘একটি মহল পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এ জন্য তারা গুজব ছড়াচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।’ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

বৈঠকে শেখ শামসুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্ব উপস্থিত ছিলেন ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শরিফ আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমানসহ শীর্ষ ব্রোকারেজ ও ডিলারদের প্রতিনিধিরা। এছাড়া বিএসইসি’র পক্ষে নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান, মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল করিম।

বিনিয়োগকারীদেরকে অভয় দিয়ে শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভয় পাওয়ার কিছু নেই। পুঁজিবাজারের জন্য আমরা কাজ করছি, চেয়ারম্যানও কাজ করছেন। কোনো ব্যক্তি বা কোনো গোষ্ঠী যদি পুঁজিবাজারের কারসাজি করতে চায়, বা ক্ষতি করতে চায়, আমরা এখন অনেক শক্তিশালী, এখন আইডেনটিফাই করতে পারি।’

তিনি জানান, বিএসইসি চেয়ারম্যান পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন-এমন গুজব ছড়ানো হয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছেন। তবে এর কেনো ভিত্তি নেই। গুজব হিসেবে যা ছড়ানো হয়েছে, সেটি হলে পুঁজিবাজারের জন্য বরং ভালো হবে। কারণ, বিএসইসি চেয়ারম্যানকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর করা হবে বলে মহলটি গুজব ছাড়িয়েছে।’

শামসুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আমাদের মতবিরোধ আছে। অবণ্টিত লভ্যাংশ ও আমানতের মধ্যে যে পার্থক্য সেটি নিয়েও আমাদের মত পার্থক্য আছে। আমাদের চেয়ারম্যান যদি ওখানে যান, তাহলে এটা তো আমাদের আর ব্যাখ্যা করে বলতে হবে না। তাহলে তো সেটা পুঁজিবাজারের জন্য আরও ভালো হবে, আরও সৌভাগ্যের বিষয় হবে। এটা তো লকোচুরির কিছু নয়। এটা নিয়ে গুজব ছড়ানো কিছু নেই।’

ক্ষুদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে ক্ষুদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য ৯০০ কোটি টাকার যে তহবিল করা হয়েছিল, সেটির মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সেটি সরকারকে আর ফেরত দেওয়া লাগবে না। নতুন করে ব্যবহার করা যাবে। বর্তমানে শেয়ারবাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে তারল্য রয়েছে।’

বৈঠক শেষে ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শরিফ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘একটি ব্রোকার হাউজ থেকে ব্যাড প্লে করা হয়েছে। তাদের হাতে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। মার্কেট প্রথমে ভালো থাকলেও পরে এ জন্য আর টেকেনি। এটার তদন্ত করে কঠিন শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্রোকারেজ হাউজের নামটা বৈঠকে উত্থাপন করা হয়নি।

তবে আমরা চাই, যারা এই ধরনের কাজ করে বাজারকে মন্দার দিকে নিয়ে যায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।’ এদিকে বৈঠকে পতনের প্রাথমিক তিনটি ইস্যুর মধ্যে দীর্ঘ উত্থানের পরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারী তাদের মুনাফা সংগ্রহ করছে। এজন্য প্রতিদিন শেয়ার বিক্রির জন্য চাপ থাকার কারণে সূচকের পতন হচ্ছে।

এছাড়া বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলাম পদত্যাগ ও সরকার থেকে দেওয়া এক হাজার কোটি টাকার তহবিল ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে। যে কারণে সূচকের পতন হতে পারে আলোচনায় উঠে আসে।