শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বাংলাদেশকে নিজের দ্বিতীয় বাড়ি মনে করেন জানিয়ে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ড. লোটে শেরিং বলেছেন, ‘বাংলাদেশে আসতে আমার খুব ভালো লাগে। শেখ হাসিনা আমার জন্য একজন অনুপ্রেরণাময় নারী, তিনি আমার মাতৃতুল্য।’

বুধবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে ১০ দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের অষ্টম দিনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘শান্তি, মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত’। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী প্যারেড স্কয়ারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’- বঙ্গবন্ধুর এমন পররাষ্ট্র নীতি বাংলাদেশের উন্নতির মূলমন্ত্র বলে মনে করেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ড. লোটে শেরিং। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে একটি গর্ব করার মতো ইতিহাস দিয়ে গেছেন।’

বঙ্গবন্ধুর ভীত গড়ে যাওয়া বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়ে প্রশংসা করেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যে শক্ত ভীত বাংলাদেশের গড়েছিলেন সেই বাংলাদেশের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাবার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে তার কন্যাকে নিয়ে গর্ব করতেন।’

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বাংলাদেশের ময়মনসিংহ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। সেই সুবাদে তিনি অনেক দিন বাংলাদেশে কাটিয়েছেন। পড়াশোনা শেষ করার পর বিভিন্ন সময়ে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন ২০১৮ সালে। এটি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশে তার দ্বিতীয় সফর।

গত এক দশকে বাংলাদেশের অগ্রগতিতে ভুটান গর্বিত বলে জানান লোটে শেরিং। তিনি বলেন, ‘যখনই বাংলাদেশে আসি, নতুন করে অগ্রগতির চিত্র দেখতে পাই। গত এক দশকে বাংলাদেশ বিভিন্ন খাতে যথেষ্ট উন্নতি করেছে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক খাতের কথা না বললেই নয়। কোভিড-১৯ সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশে বাংলাদেশের জিডিপি সর্বোচ্চ ছিল।’ সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল বলেও মনে করেন লোটে শেরিং।

বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে চলমান সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে সামনেও একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি কোভিড-১৯ মহামারির সময় দেশটির প্রতি বাংলাদেশের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে তিনদিনের সফরে মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) সকালে ঢাকায় আসেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং। বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) সকালে তার দেশে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ৩০ এপ্রিল মালদ্বীপের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ শেখ হাসিনাকে মাতৃতুল্য বলে উল্লেখ করেছিলেন। ওই দিন সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান শেষে প্রধানমন্ত্রী ভুটান থেকে দেশে ফেরেন। একই বিমানে ছিলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ। তিনি ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতিকালে শেখ হাসিনাকে মাতৃতুল্য বলে উল্লেখ করেন।