শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারের লেনদেন দ্রুত চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মোঃ রকিবুর রহমান বলেছেন,করোনাভাইরাসে বিশ্বের অনেক দেশে লকডাউন থাকলে্ও কোনো দেশেই পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ করা হয়নি। বিশ্বায়ন ব্যবস্থায় বাংলাদেশ অন্য দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারে না। তাছাড়া বর্তমান বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে অনেক বিনিয়োগকারীর জরুরি টাকা দরকার। লেনদেন বন্ধ থাকায় তারা তাদের বিনিয়োগ থেকে কোনো টাকা তুলে নিতে পারছেন না।

তিনি বলেন, যেহেতু বিএসইসি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস (শেয়ারের দামের সর্বনিম্ন সীমা) বেঁধে দিয়েছে, তাই বাজারে দর পতনেরও কোনো ভয় নেই। বরং বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ২শ কোটি টাকা করে যে তহবিল সুবিধা দিয়েছে, তা এই সময়ে বিনিয়োগে এসে বাজারকে সাপোর্ট দিতে পারে। আজ রোববার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি স্টক এক্সচেঞ্জ খুলে দিয়ে লেনদেন চালু করার আহ্বান জানান। এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

উল্লেখ, দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিস্তার ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি চলছে। গত ২৪ মার্চ সরকার ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা। পরে দুই দফায় তা বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। নতুন করে ছুটি না বাড়ালে ২৬ এপ্রিল দেশে ফের অফিস-আদালত খুলবে। তবে দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকায় শেষ পর্যন্ত সাধারণ ছুটি আরও ২ সপ্তাহের জন্য বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মহল থেকে আভাস পাওয়া গেছে।

সাধারণ ছুটিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ও সিডিবিএল বন্ধ থাকায় পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ রাখে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ। বিএসইসির অনুমতি নিয়েই লেনদেন বন্ধ রাখার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে সাধারণ ছুটির মেয়াদ আবার বাড়লেও পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ রাখার পক্ষে নন ডিএসইর পরিচালক মোঃ রকিবুর রহমান।

তিনি বিবৃতিতে বলেন, যদি সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়েও তবু আগামী ২৬ এপ্রিল পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করা উচিত। কারণ বিশ্বায়নের যুগে বিশ্বের অন্য পুঁজিবাজারগুলো থেকে আমাদের বাজার আলাদা থাকতে পারে না। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি ভুল বার্তা দিচ্ছে।

রকিবুর রহমান বলেন, মানবিক কারণেও পুঁজিবাজারে লেনদেন চালু করা জরুরি। অনেক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী আছেন, যাদের জীবনের সব সঞ্চয় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা আছে। বর্তমানে সাধারণ ছুটিতে সবকিছু বন্ধ থাকায় তাদের অনেকেরই আয়-রোজগার নেই। তাদের হয়তো জরুরি টাকা দরকার। কারণ অর্থনীতির আগে বেঁচে থাকা জরুরি। কিন্তু লেনদেন বন্ধ থাকায় তারা তাদের বিনিয়োগ থেকে কোনো টাকা তুলে নিতে পারছেন না। লেনদেন চালু হলে তারা তাদের এই সঙ্কট একটু সহজে মোকাবেলা করতে পারবেন।

তিনি বলেন, ডিএসইর এই পরিচালক জানান, লেনদেন চালুর জন্য খুব বেশি জনবল প্রয়োজন হবে না। প্রত্যেক ব্রোকারহাউজে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সর্বোচ্চ ৪ থেকে ৫ জন লোক, সিডিবিএলের কয়েকজন কর্মকর্তা, স্টক এক্সচেঞ্জের আইটি ও সার্ভিল্যান্স বিভাগসহ দুতিনটি বিভাগের কর্মকর্তা, বিএসইসিতে সার্ভিল্যান্স বিভাগের দু’তিন জন কর্মকর্তা হলেই চলবে। আর ব্যাংক তো এমনিতেই খোলা আছে। ব্যাংকিং এর সময়ের সঙ্গে মিল রেখেই লেনদেনের সময়সূচি নির্ধারণ করা যায়।