শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বেশ কিছুদিন ধরে পুঁজিবাজারের অবস্থা ভালো না। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কয়েকদিন ধরে প্রায় চার হাজারের ঘরে অবস্থান করছে। কোনভাবেই যেন সূচক চার হাজার অতিক্রম করছে না। এমন অবস্থায় যোগ হয়েছে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারেও করোনা ভাইরাসের নেগেটিভ প্রভাব পড়েছে।

দিনকে দিন যেন প্রধান সূচকসহ ডিএসইএস ও ডিএস৩০ সূচক তলানিতে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের পুঁজিবাজারে ভালো মানের কোম্পানি আসা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। আশার কথা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক মানের দেশীয় কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পুঁজিবাজারে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে কোম্পানিটির বিডিং সম্পন্ন হয়েছে।

খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমানে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ওয়ালটনের মতো ভালো মানের কোম্পানিগুলো দ্রুত আসা উচিত। দেশের অর্থনীতির সাথে পুঁজিবাজার অতপ্রতভাবে জড়িত। একটি দেশের পুঁজিবাজার যত শক্তিশালী হয় সে দেশের অর্থনীতি তত চাঙ্গা হয়। তাই দেশের অর্থনীতির স্বার্থে, পুঁজিবাজারের স্বার্থে ওয়ালটনকে দ্রুত লেনদেনে নিয়ে আসা উচিত।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, ওয়ালটন ভালো মানের কোম্পানি। আশা করছি পুঁজিবাজারে ওয়ালটন ভালো ভূমিকা রাখবে। এমনিতেই করোনা ভাইরাসের প্রভাবে পুঁজিবাজার ভালো অবস্থানে নেই। এই মুহূর্তে ওয়ালটন আসলে পুঁজিবাজারের গতি বৃদ্ধি পাবে। ওয়ালটনের মতো আরও ভালো মানের কোম্পানিগুলোকে নিয়ে আসতে হবে পুঁজিবাজারে।

হযরত শাহ সিকিউরিটিজ এর কর্মকর্তা জামাল হোসেন বলেন, সামগ্রিক অর্থে পুঁজিবাজারের নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে পুঁজিবাজারে চরমভাবে নেগেটিভ প্রভাব পড়েছে। এরমধ্যে কিছুটা হলেও আশার খবর হচ্ছে, ওয়ালটন পুঁজিবাজারে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, ওয়ালটন আসলে রাতারাতি যে পুঁজিবাজার ভালো হবে তেমনটি নয়। তবে ওয়ালটন আসলে কিছুটা হলেও পুঁজিবাজারের উন্নতি হবে। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ওয়ালটনের মতো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে অতি দ্রুত নিয়ে আসতে হবে।

আমরা চাই ওয়ালটন পুঁজিবাজারে আসুক। তাদের রেপুটেশন ভালো। দেশসহ দেশের বাহিরে তাদের গ্রাহক রয়েছে। তারা ভালো সার্ভিস দিচ্ছে। ওয়ালটনের প্রতি সাধারণ মানুষের ভালো ধারনা রয়েছে।

সূত্র জানায়, নিলামে সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন কাট-অফ প্রাইস পর্যন্ত দর প্রস্তাবকারীরা, তাদের প্রস্তাবিত দরে ৬০ কোটি ৯৬ লাখ ৫৭ হাজার ৮০৫ টাকার ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার কিনবেন। আর কাট অফ প্রাইস থেকে ১০ শতাংশ কম দরে ৩৯ কোটি ৩ লাখ ৪২ হাজার ১৯৫ টাকার শেয়ার প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে ইস্যু করা হবে। এর আগে গত ২ মার্চ বিকাল ৫টায় কোম্পানিটি কাট অফ প্রাইস নির্ধারণের জন্য নিলাম শুরু করে। যা শেষ হয় গত বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ বিকাল ৫টায়।

কোম্পানিটি আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। আর এই অর্থ কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ ও আইপিওর ব্যয় মেটাতে কাজে লাগানো হবে।

সর্বশেষ ৫ অর্থবছরে কোম্পানিটির ভারিত গড় হিসাবে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ২৮ টাকা ৪২ পয়সা। আর ৩০ জুন, ২০১৯ তারিখে শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (পুনর্মুল্যায়ন সঞ্চিতিসহ) ছিল ২৪৩ টাকা ১৬ পয়সা। আর পুনর্মুল্যায়ন সঞ্চিতি ছাড়া শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ১৩৮ টাকা ৫৩ পয়সা।

কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্বে আছে এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। উল্লেখ্য, ওয়ালটনের কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১৫ টাকা। নিলামের মাধ্যমে কোম্পানিটির এই কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণ করা হয়।