শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: দেশে বিদেশি বিনিয়োগ সামান্য বাড়লেও শেয়ারবাজারে তা কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর নিট এফডিআই বেড়েছে ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। কিন্তু এ সময় শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৪৮ দশমিক ৬১ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যের ওপর করা হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে দেশে এফডিআই এসেছে ২৭৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেশি। মোট এফডিআই থেকে একই সময়ে বিদেশিদের অর্থ প্রত্যাবাসন বাদ দিয়ে নিট এফডিআইর হিসাব করা হয়। চলতি অর্থ-বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে নিট এফডিআই এসেছে ১৩৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা গত অর্থ-বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এ সময়ে নিট এফডিআই বেড়েছে ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি অর্থ-বছরের প্রথম ৬ মাসে দেশের শেয়ারবাজারে নিট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে মাত্র ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা গত অর্থ-বছরের একই সময়ে ছিল ৭ কোটি ২০ লাখ ডলার। অর্থাৎ আলোচিত সময়ে শেয়ারবাজারে নিট বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা ৪৮ দশমিক ৬১ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা ও ভালো মানের কোম্পানির শেয়ার বাজারে পর্যাপ্ত না থাকায় দীর্ঘদিন অব্যাহত দরপতন হয় শেয়ারবাজারে। অন্যদিকে, বাজারে ডলারের দাম ধারাবাহিক বাড়লেও অপরিবর্তীতই রয়েছে টাকার মান। ফলে বিদেশিরা শেয়ার বিক্রি করে এখন আগের দামে ডলার কিনতে পারছে না। ডলারের দাম আরও বাড়লে লোকসানের পরিমাণও বাড়বে। এমন শঙ্কায় শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমছে।

এদিকে ধারাবাহিক দরপতনের পর সম্প্রতি সরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা বাজার উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, বাজার স্থিতিশীল হবে। পাশাপাশি ডলারের দাম সহনীয় পর্যায় আসলে আগামীতে বিদেশিরা আবারও শেয়ারবাজারে আসবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরে চার দফা ডলারের দাম বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অর্থ-বছরের শুরুতে অর্থাৎ জুন ২০১৯, আন্তঃব্যাংক রেটে ডলারের দাম ছিল ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা। ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৪ টাকা ৯০ পয়সায়। বর্তমানে (২০২০ সালের ফেব্রম্নয়ারি) তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সায়।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে দেশের পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮২২ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাব (-) ঋণাত্মক রয়েছে ১৩৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী এর পরিমাণ প্রায় ১১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা।