pgcbশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের রাষ্ট্রত্তর কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড  আজ দরপতনের তালিকায় চলে আসছে। তবে হঠাৎ কেন এমন দরপতন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আলোচনার শেষ নেই। তবে দুই ইস্যুতে কেন্দ্র করে পাওয়ার গ্রিডের দরপতন হয়েছে বলে শেয়ার বার্তা ২৪ ডটকমের অনুসন্ধানে জানা গেছে।

সুত্রে জানায়, রাষ্ট্রত্তর কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড পিডিবির কাছ থেকে কেনা সঞ্চালন অবকাঠামোর বিপরীতে তাদের নামে ২৫ কোটিরও বেশি নতুন শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।

এজন্য আসন্ন বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন প্রয়োজন হবে তালিকাভুক্ত সরকারি কোম্পানিটির। এদিকে অভিহিত মূল্যে শেয়ার ইস্যুর এ পরিকল্পনা প্রকাশের পর সোমবার পাওয়ার গ্রিড শেয়ারে বড় দরপতন দেখা গেছে।

স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, ছয়টি চুক্তির আওতায় বিপিডিবির কাছ থেকে বিদ্যুত্ সঞ্চালন অবকাঠামো কেনে পাওয়ার গ্রিড। এজন্য প্রদেয় অর্থের বিপরীতে মালিক প্রতিষ্ঠানটিকে অভিহিত মূল্যে মোট ২৫১ কোটি ৮১ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার দেবে তারা। আসন্ন এজিএমে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন পেলে নতুন করে পাওয়ার গ্রিডের ২৫ কোটি ১৮ লাখ ১৪ হাজার শেয়ার পাবে বিপিডিবি।ৎ

সোমবার ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৬ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত ফলাফলের পাশাপাশি এ সময়ের জন্য ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে পাওয়ার গ্রিড। বার্ষিক শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৬৬ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৯০ পয়সা। ২০১৫ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় পাওয়ার গ্রিড।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পাওয়ার গ্রিড ১ টাকা ২ পয়সা ইপিএস দেখিয়েছে, আগের বছর যা ছিল ৬০ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ৭৯ টাকা ২ পয়সা।

নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, লভ্যাংশ ও নতুন শেয়ার ইস্যুর পরিকল্পনা অনুমোদনের জন্য আগামী ৭ জানুয়ারি সকাল ১০টায় রাজধানীর বিদ্যুত্ ভবনে এজিএম আয়োজন করবে পাওয়ার গ্রিড। রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১ ডিসেম্বর।

ডিএসইতে সর্বশেষ ৫৮ টাকা ৯০ পয়সায় পাওয়ার গ্রিডের শেয়ার হাতবদল হয়, আগের দিনের চেয়ে যা ৯ দশমিক ১ শতাংশ কম। দিনের সর্বনিম্ন দর ছিল ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা ও সর্বোচ্চ ৬৬ টাকা ৮০ পয়সা। লেনদেন শেষে দর দাঁড়ায় ৫৯ টাকা ২০ পয়সা, আগের দিন যা ছিল ৬৪ টাকা ৮০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ৪২ টাকা ৫০ পয়সা ও সর্বোচ্চ ৬৯ টাকা ৭০ পয়সা।

বাজার-সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘোষিত লভ্যাংশ ও কোম্পানির মুনাফা নিয়ে হতাশার কোনো কারণ ছিল না। সরকারকে বাজারদরের তুলনায় অনেক কম দামে শেয়ার দেয়ার পরিকল্পনায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হতাশা কাজ করছে, যার প্রভাব দেখা যায় সোমবারের লেনদেনে।

২০০৬ সালে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৪৬০ কোটি ৯১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে আছে ৪৫৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ৪৬ কোটি ৯ লাখ ১২ হাজার ৯৯১।

এর ৭৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বাংলাদেশ সরকার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১৮ দশমিক ২৮, বিদেশী দশমিক ২১ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে বাকি ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ শেয়ার।

সর্বশেষ নিরীক্ষিত মুনাফা ও বাজারদরের ভিত্তিতে পাওয়ার গ্রিড শেয়ারের মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ৬৫ দশমিক ৭৮, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত মুনাফার ভিত্তিতে যা ১৪ দশমিক ৫১।