textile lagoশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: আগামী সপ্তাহে সার্বিক বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকার পুর্বাভাস পাওয়া গেছে। তবে তিন ইস্যুতে চাঙ্গা থাকার কথা রয়েছে বস্ত্র খাত ও জ্বালানী খাত। এ দু’খাতকে ঘিরে বিনিয়োগকারীদের কৌতুহলের শেষ নেই। বিশেষ করে দীর্ঘ দিন ঝিমিয়ে থাকা বস্ত্র খাতের উপর বিনিয়োগকারীদের নজর বেশি। বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অধিকাংশ বস্ত্র খাতের শেয়ারের দর ফেস ভ্যালুর কাছাকাছি, তাই বস্ত্র খাতের শেয়ারের দর বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়া জিএসপি সুবিধা না পাওয়ার ফলে তৈরী পোষাক খাতের রপ্তানী গত বছরের তুলনায় যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে সাথে সাথে এ বছরের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যা থেকে অনুমান করা যায় এ খাতের কোম্পানী গুলোর লেনদেন সামনে বাড়বে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা।

skএছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরকে আসন্ন জাতীয় বাজেটে তৈরি পোশাক খাতের করপোরেট ট্যাক্স, অগ্নি নিরাপত্তা সরঞ্জাম আমদানি শুল্কমুক্ত এবং রফতানি খাত হিসেবে খাতকে ভ্যাটমুক্ত করার আহ্বান জানায় তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ। এরপরে বৃহস্পতিবার বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরে হাওয়া লাগে। এমনটাই ধরনা করছেন অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা।

সূত্র জানায়, তৈরি পোশাকশিল্পকে টেক্স কম্পালাইন্স খাত শিল্প হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা দিতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এজন্য তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ এবং এনবিআরের মধ্যে বুধবার এক মতবিনিময় সভা হয়। এ বৈঠককে উভয় পক্ষই পার্টনারশিপ সভা বলে একমত হয়েছেন। এনবিআরের প্রত্যাশা-প্রতি তিন মাস পরপর এই বৈঠক হবে।

sectorএ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এনবিআরের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়া তৈরি পোশাক খাতের অটোমেশনসহ ২০২১ সালের পোশাক খাতের ৫০ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দুই পক্ষ একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়।

এ প্রসঙ্গে মাহমুদ হাসান খান বাবু জানান, এনবিআরের সঙ্গে বিজিএমইএ অনানুষ্ঠানিক এই বৈঠকে আসন্ন বাজেটে করপোরেট টেক্স ৩৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ করা এবং অগ্নি নিরাপত্তা সরঞ্জাম আমদানিতে পাঁচ শতাংশের স্থলে শুল্কমুক্ত করার জন্য বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয় এনবিআরকে।

1এদিকে গত সপ্তাহে বাজারের লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের, দর কমেছে ১৪৪টির ও দর অপরিবর্তত রয়েছে ৩৬টির। এসময় ডিএসইর সার্বিক মূল্য সূচক কমেছে ৪.৮৭ পয়েন্ট ও সার্বিক লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় ৮.৯৫ শতাংশ কমে ১ হাজার ৪৮৮ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।

textileএছাড়া বস্ত্র খাতকে ঘিরে গত সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৪৪ কোটি ১৯ লাখ ১০ হাজার টাকা। যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেশি। এ খাতে লেনদেনে প্রথম স্থানে ছিল ফার ইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ফ্যামিলি টেক্স। অন্যদিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৮২ কোটি ৭৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ খাতে আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৮ শতাংশ লেনদেন বেড়েছে।

শাহজীবাজার পাওয়ারকে ঘিরে গত সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ১৭.৯৯ শতাংশ বা ১৪ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। এসময় এখাতে দাপুটে অবস্থানে ছিল কোম্পানিটি। অন্যদিকে লেনদেনে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার। গতসপ্তাহে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতে দৈনিক গড়ে ১৭.৭৭ শতাংশ বা ১৪ কোটি ৭০ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

এছাড়া সিমেন্ট খাতকে ঘিরে দৈনিক লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৭৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আগের সপ্তাহের তুলনায় এখাতে লেনদেন বেড়েছে ২২ শতাংশ। এ খাতের লাফার্জ সুরমাকে ঘিরে গতসপ্তাহে গড়ে ৬১.৮২ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। যা টাকার অংকে ১২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

এদিকে, সিমেন্ট খাতের সর্বমোট লেনদেনের ১৫.৯৩ শতাংশ হয়েছে হাইডেলবার্গ সিমেন্টকে ঘিরে ও ১৩.৯৮ শতাংশ লেনদেন হয়েছে প্রিমিয়ার সিমেন্টকে ঘিরে। বস্ত্র খাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাত, সিমেন্ট খাত, ভাল হলে বাজার স্বয়ংক্রিয় ভাবে চাঙ্গা হবে। এদিকে চলতি সপ্তাহে লেনদেনে কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে ‘আগামী সপ্তাহে কোন খাতের শেয়ারের টানওভার থাকবে’ পাশাপাশি কোন খাতের শেয়ারের উধ্বমুখী থাকবে ‘এ নিয়ে শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকমে বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা বাজার ভাল যাবে এবং বস্ত্র খাত ও জ্বালানী খাতের শেয়ারের কথা উল্লেখ্য করেছেন, বস্ত্র খাত শেয়ার নিয়ে নানা কারন মন্তব্য করেছেন।

sharebarta lagoমফিজ রহমান নামে এক বিনিয়োগকারী লিখেছেন, আগামী সপ্তাহে বাজার চাঙ্গা থাকবে তবে মাঝে মধ্যে সুচকের উঠানামা থাকতে পারে। এছাড়া বস্ত্র খাত, সিমেন্ট খাত, জ্বালানী খাতের কয়েকটা কোম্পানির শেয়ার ভাল হবে তিনি মন্তব্য করেছেন। তেমনি বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়া ফেস ভ্যালুর কাছকাছি থাকা শেয়ারে বিনিয়োগের উপযোগী বলে মনে করেছেন।

t-1শাহিন নামে আরেক বিনিয়োগকারী লিখেছেন, জিএসপি সুবিধা না পাওয়ার পরও তৈরী পোষাক খাতের রপ্তানী গত বছরের তুলনায় যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে সাথে সাথে এ বছরের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাচ্ছে যা থেকে অনুমান করা যায় এ খাতের কোম্পানী গুলোর লেনদেন বাড়বে সাথে সাথে মূল্যও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মনে করেন।

এম এ উদ্দিন চৌধুরী নামে আরেক বিনিয়োগকারী লিখেছেন, বর্তমান বাজারের উন্নতি করতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বাজারমুখী করতে হবে। তাহলে বাজার স্বাভাবিক গতিতে চলবে।

t-2রাসেল চৌধুরী নামে আরেক বিনিয়োগকারী লিখেছেন, বাজার আগামী সপ্তাহে ভাল হতে পারে। তবে বস্ত্র এবং সিমেন্ট খাতের শেয়ারের আধিপত্য থাকবে।

মিজান রহমান নামে আরেক বিনিয়োগকারী লিখেছেন, চলতি সপ্তাহে ব্যা্ংক এবং আর্থিক খাতের শেয়ারের উন্নতি হবে। অন্য খাতের শেয়ার ও চাঙ্গা থাকবে। তবে বাজার উঠানামার মধ্যে থাকলে ও দিনশেষে সুচকের উন্নতি হবে।

আসাদুজ্জামান টিপু নামে আরেক বিনিয়োগকারী লিখেছেন, চলতি সপ্তাহে বাজারে  বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের শেয়ারের আধিপত্য থাকবে। পাশাপাশি বাজারে সুচক ও লেনদেন বাড়বে।

t-3তারেকুজ্জামান তারেক নামে আরেক বিনিয়োগকারী লিখেছেন, সিমন্টে এবং বস্ত্র খাতের শেয়ারে উন্নতি হবে। পাশাপাশি ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ারও চাঙ্গা থাকবে।

একরাম হোসেন তুষার নামে আরেক বিনিয়োগকারী লিখেছেন, বস্ত্র খাত & জ্বালানী খাতের কোম্পানির শেয়ার ভাল হবে। এছাড়া ওষুধ-রসায়ন খাতের কয়েকটা কোম্পানির শেয়ার ভাল হবে। কারন একমির শেয়ার বাজারে আসছে।

t-5বেল্লাল হোসেন নামে আরেক বিনিয়োগকারী লিখেছেন, কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়বে। আব্দুল কুদ্দুস নামে আরেক বিনিয়োগকারী লিখেছেন, আগামী সাপ্তাহের প্রথম তিনদিন বাজার ভালো থাকবে। পরের দুই দিন কারকশনে যেতে পারে। লেনদেন ৫০০কোটি ছাড়িয়ে না গেলে ব্যাংকের শেয়ারের মূল্যে বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

ফাইনান্স শেয়ার বাড়বে না। কিছু কোম্পানির শেয়ার ব্যক্তিক্রম হতে পারে। পাশাপাশি টেক্সটাইল সেক্টারের কম দামের শেয়ারগুলো বাড়বে, তবে পরবতীতে কারেকশনে যেতে পারে।
এছাড়া জালানি, বিবিধও ঔষধ খাতের৫/৬টিশেয়ারের দাম বাড়তেপারে।

সাইদুল ইসলাম সজিব নামে আরেক বিনিয়োগকারী লিখেছেন, ২০১০ এর কথা বলছি, আমি একা নই প্রায় বিনিয়োগকারী বলতে শুনতাম, ইস যদি ফেইস ভ্যালুতে ব্যাংক এর এবং কিছু ভালো ভালো শেয়ার কিনতে পারতাম, মানে যে কোম্পানি গুলো ধারাবাহিক ভাবে প্রতি বচ্ছর ভালো প্রফিট দিয়ে আসছে। তা

হলে সারা বচ্ছর প্রফিট না করলে বাষিক যে বনাস কিংবা যে ক্যাশ পাবো সেটা বিক্রি করেই দিব্বি চলতে পারবো। ২০% ২৫% দিলেইতো যথেষ্ট।  অথচ এখন এতো দাম কম মানে ফেইস ভ্যালুর নিচে শেয়ার পাওয়া যাচ্ছে এবং ২০%২৫% প্রফিট ও দিচ্ছে তবু আমরা আস্থা রাখতে পারি না।

আমিনুল ইসলাম স্বপন নামে আরেক বিনিয়োগকারী লিখেছেন, বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। তবে আর্থিক খাত ছাড়া সব খাতের শেয়ার চাঙ্গা থাকবে।

হয়রত শাহ আমানত সিকিউরিটিজের  ইনচার্জ বি ফারুক চৌধুরী লিখেছেন, বস্ত্র খাতের শেয়ার ভাল থাকবে।