শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের বড় দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ক্যাপিটাল গেইনের করের খবরে সূচকের দরপতন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মন্তব্য করেন। কারণ পুঁজিবাজারের ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল গেইনের উপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নতুন করে কর আরোপ করতে যাচ্ছে বলে সম্প্রতি এক খবর ছড়িয়েছে।

নতুন আয় কর আইনে এটি করা হচ্ছে বলে গুজব ছড়ানো হয়। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। তবে এ খবর সম্পূর্ন মিথ্যা ও গুজব। এটি আগের মতোই অব্যাহতি থাকছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম আরও চার বছরের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে পুনর্নিয়োগ পাওয়ার সংবাদে গত পুঁজিবাজারে সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। তবে এক কার্যদিবসে না যেতেই পুঁজিবাজারে আবার সূচকের বড় দরপতন হয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। তবে দুই বাজারেই বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, এনবিআর ২০১৪ সাল থেকেই ক্যাপিটাল গেইনের উপর কর নিয়ে আলোচনা করে আসছে তবে এখনো পর্যন্ত কর অব্যাহতি রাখা হয়। পুঁজিবাজারের স্বার্থেই এনবিআর এবারো কর অব্যাহতি দিবে। কমিশন ও এনবিআর এবিষয়ে যৌথভাবে কাজ করছে। এটা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ এটা সঠিক নয়।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বেচাকেনার মাধ্যমে অর্জিত মূলধনি আয়ে কর বসাতে যাচ্ছে বলে একটি খবর ছড়িয়েছে। তবে এটি সত্য নয়। বিএসইসি সূত্র মতে, যেকোনো তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজ থেকে ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল গেইনের উপর আগে থেকেই কর মুক্ত আছে। নতুন করে কোন কর আরোপ করা হচ্ছে না। কর আরোপের তথ্য সঠিক নয়। ফলে তালিকাভুক্ত শেয়ার থেকে ব্যক্তিদের মূলধন লাভ কর মওকুফ বহাল থাকবে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, এই নীতি বাস্তবায়িত হলে, ব্যক্তি বিনিয়োগকারী তাদের আয়কর স্ল্যাবের উপর নির্ভর করে তাদের পুঁজিবাজার লাভের বিপরীতে কর বসতে পারে। তবে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো থেকে অর্জিত মুনাফার উপর এই কর বসলে পুঁজিবাজার আরও ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

বাজার বিশ্লেষণে জানা যায়, সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৬.১৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৫৬৯ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরীয়াহ সূচক ১৩.৩৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২২১ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২.১৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৯৩ পয়েন্টে।

আজ ডিএসইতে ৬৬৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৬১৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকার। আগের দিনের চেয়ে আজ লেনদেন বেড়েছে ৪৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আজ ডিএসইতে ৩৯৭টি প্রতিষ্ঠানের ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৬টির, কমেছে ২৭৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ ৫৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৫ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

আজ সিএসইতে ২২১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৮টির, কমেছে ১২০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টি প্রতিষ্ঠানের। আগের দিন সিএসইতে ২০৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে দর বেড়েছিল ১১৩টির, কমেছিল ৭১টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৫টি প্রতিষ্ঠানের।