শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজারে কিছুটা মন্দাভাব দেখা গেলেও প্রতিনিয়ত আসছেন নতুন বিনিয়োগকারী। এসব বিনিয়োগকারীর মধ্যে যেমন দেশি বিনিয়োগকারী রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন প্রবাসী বা বিদেশি বিনিয়োগকারীও। সেপ্টেম্বর মাসের প্রতি কার্যদিবসেই পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগকারী যুক্ত হয়েছেন। এর মাধ্যমে চলতি মাসে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি নতুন বিনিয়োগকারী যুক্ত হয়েছেন পুঁজিবাজারে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত আগস্ট মাস থেকে পুঁজিবাজারে বাড়ছে নতুন বিনিয়োগকারী। আগস্ট মাসে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব বেড়েছে ৩ হাজার ৯৩৬টি। চলতি সেপ্টেম্বর মাসে বিও হিসাব বেড়েছে ৩ হাজার ৬২৪টি। অর্থাৎ দুই মাসে ৭ হাজার ৫৬০টি বিও হিসাব বেড়েছে।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্রোকারেজ হাউজ অথবা মার্চেন্ট ব্যাংকে একজন বিনিয়োগকারীর খোলা হিসাবকেই বলা হয় বিও হিসাব। এই বিও হিসাবের মাধ্যমেই বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে লেনদেন করেন। বিও হিসাব ছাড়া শেয়ারবাজারে লেনদেন করা সম্ভব নয়।

দুই মাস ধরে পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগকারী আসলেও শুধু জুলাই মাসেই এক লাখ ১৭ হাজার ৭৪৯টি বিও হিসাব বন্ধ হয়ে যায়। চলতি বছরের জুন শেষে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মোট বিও হিসাব ছিল ১৮ লাখ ৬০ হাজার ৭৭৪টি। জুলাই শেষে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ২৪টি। বন্ধ হওয়া এসব বিও হিসাবের মধ্যে স্থানীয় বিনিয়োগকারী যেমন ছিলেন, তেমনি বিদেশি বা প্রবাসী বিনিয়োগকারীরাও ছিলেন। পাশাপাশি ছিল কোম্পানির বিও হিসাবও।

এক মাসে লাখের অধিক বিও হিসাব বন্ধ হওয়ার পর আগস্টের শুরু থেকেই আবার বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব বাড়তে থাকে। এই বিও হিসাব বাড়ার ধারা চলতি মাসজুড়েও অব্যাহত রয়েছে। চলতি মাসের প্রতি কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে নতুন বিনিয়োগকারী এসেছেন।

নতুন করে যেসব বিও হিসাব খোলা হয়েছে তার মধ্যে যেমন দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারী আছে, তেমনি আছেন নারী ও পুরুষ বিনিয়োগকারী। একই সঙ্গে কোম্পানির বিও হিসাবের সংখ্যাও বেড়েছে। তবে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা তুলনামূলক কম বেড়েছে।

সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশের (সিডিবিএল) তথ্য অনুযায়ী, ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৫০ হাজার ৫৮৫টি। যা আগস্ট মাস শেষে ছিল ১৭ লাখ ৪৬ হাজার ৯৬১টি। এ হিসাবে সেপ্টেম্বর মাসে বিও হিসাব বেড়েছে ৩ হাজার ৬২৪টি।

সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশি বিনিয়োগকারীদের নামে বিও হিসাব আছে ১৬ লাখ ৭৮ হাজার ৪৭৭টি। যা আগস্ট শেষে ছিল ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫৩টি। অর্থাৎ দেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ৩ হাজার ৪২৪টি বেড়েছে। বর্তমানে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব আছে ৫৫ হাজার ৫০১টি। গত আগস্ট শেষে এই সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার ৪৬১টি। অর্থাৎ এক মাসে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব বেড়েছে ৪০টি।

বর্তমানে শেয়ারবাজারে যেসব বিনিয়োগকারী আছেন, তার মধ্যে পুরুষ বিনিয়োগকারীদের নামে বিও হিসাব আছে ১৩ লাখ ১০ হাজার ২৪০টি। আগস্ট শেষে এই সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৭ হাজার ৩৯৮টি। অর্থাৎ পুরুষ বিনিয়োগকারীদের হিসাব ২ হাজার ৮৪২টি বেড়েছে।

এছাড়া বর্তমানে নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব দাঁড়িছে ৪ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৮টি। আগস্ট শেষে এই সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ২৩ হাজার ১১৬টি। এ হিসাবে নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব বেড়েছে ৬২২টি। বর্তমানে কোম্পানি বিও হিসাব রয়েছে ১৬ হাজার ৬০৭টি। আগস্ট শেষে এই সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৪৪৭টি। সে হিসাবে ১৬০টি কোম্পানি বিও হিসাব বেড়েছে।