শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের ৬৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. রফিকুজ্জামান বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি করেন। দুদক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং এর পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পল্টন মডেল থানায় একটি অভিযোগ করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। সেই অভিযোগের অপরাধ দুর্নীতি দমন কমিশনের তফসিলভুক্ত হওয়ায়, এজাহার হিসেবে গ্রহণ না করে জিডিভুক্ত করে কমিশন বরাবর পাঠায় পল্টন থানা।

এরপর দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. রফিকুজ্জামান ও উপ-পরিচালক মো. তানজির হাসিব সরকারের সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম অভিযোগ তদন্তে কাজ শুরু করে। তদন্তে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডির বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের অনুমতি ছাড়া শেয়ার বিক্রির অর্থ তসরুপ এবং কোম্পানির হিসেবে বিনিয়োগকারীদের পাওনায় ঘাটতি রেখে ৬৫ কোটি ৩৩ লাখ ৩৭ হাজার ৪৭৪ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায় দুদক।

অনুসন্ধানে দুদক জানতে পারে, সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করে ট্রেড মেশিনে ডুপ্লিকেট ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে সেটেলমেন্ট ডিফল্টের দ্বারা অবৈধভাবে গ্রাহকদের শেয়ার বিক্রি এবং হিসাব হতে টাকা আত্মসাৎ করেন মো. শহিদুল্লাহ।

অভিযুক্ত শহিদুল্লাহ ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেডের মাধ্যমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মার্চেন্ট এবং ব্রোকার হিসেবে ব্যবসা করে আসছিলেন। ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেডের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত হিসাব তিনি এককভাবে পরিচালনা করতেন। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৩ জুন বিনিয়োগকারীদের টাকা আত্মসাৎ করে গাঢাকা দেয় শেয়ার ও ইউনিট বেচাকেনার মধ্যস্থতাকারী ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিকরা।

এ ঘটনার পরপরই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। তারা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) দুই প্রতিনিধিসহ তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কোম্পানিটির এমডি শহিদুল্লাহ আত্মগোপনে চলে গেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর তৎতকালীন এমডি বলেন, ব্রোকারেজ হাউসটিতে ২১ হাজার বিনিয়োগকারীর ৮২ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট ফ্রিজ করা হয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের পাওনা দ্রুত পরিশোধের পদক্ষেপ নেয়া হবে। প্রয়োজনে সিডিএলের কাছে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে গ্রাহকদের অর্থ পরিশোধ করা হবে। বন্ধ করার আগে ব্রোকারেজ হাউসটি থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকার শেয়ার কেনা হয়। তবে এর বিনিময়ে ডিএসইকে দেয়া চেক বাউন্স করে।

উল্লেখ্য, ৬ জুলাই, ২০২০ লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী সীমান্ত এলাকা থেকে কোম্পানিটির এমডি মো. শহিদুল্লাহ ও তার স্ত্রী (পরিচালক) নিপা সুলতানা গ্রেফতার করে ডিবির রমনা বিভাগ। এরপর ৭ জুলাই পল্টন থানায় তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়।