শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে গণফোরামের একাংশের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেছেন, ‘কী আশ্চর্য! শুধু বিদ্যুৎ খাতে ৭০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ পেতে, যে টাকা দিয়ে প্রায় সাতটা পাওয়ার স্টেশন করা যেত। কার পেটে এই টাকা গেছে? জবাব দিতে হবে। বিদ্যুৎ মন্ত্রী জবাব দিতে হবে জনগণের কাছে। চুরি চুরি মহাচুরির রাজত্ব কায়েম করছে চারদিকে। মুক্তিযুদ্ধের অর্জন চুরির মাধ্যমে বিসর্জন দিচ্ছে দুর্নীতিবাজ সরকার।’

শনিবার বিকাল ৪টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সভায় মন্টু এসব কথা বলেন। ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যয়ে গণফোরাম’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ঈদ পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মন্টুর দল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্টু বলেন, ‘এবার মানুষের মুখে কোনো ঈদের আনন্দ ছিল না। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, লোডশেডিং, প্রশাসনের নিরীহ মানুষের উপর হামলা-মামলা, হেলমেট বাহিনীর অত্যাচারে জনগণ ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সর্বোপরি এই অবৈধ সরকারের দুঃশাসনকাল মানুষের মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে।’

গণফোরামের এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালে ১৫৪টি আসন দখল করল বিনা নির্বাচনে। মূলত ওই নির্বাচন হয়েছিল সাজানো নির্বাচন, ২০১৮ সালে মধ্যরাতের নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করে। পৃথিবীর কোথাও এমন কলঙ্কিত ইতিহাস নেই। দেশের বর্তমান ক্রান্তিকাল উত্তরণে একটাই উপায়, সব রাজনৈতিক দলের ঐক্যের মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা। দেশ ও জাতির স্বার্থে ভয় বিতাড়িত করে সাহসে বুক বেঁধে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাজপথে লড়াইয়ে নামতে হবে সবাইকে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একযুগ ধরে দুঃশাসনের মাধ্যমে লুটপাট করে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে ফেলেছে। জনগণের টাকা লুটপাট করার সুযোগ করে দিয়েছে এই সরকার। আমরা এর বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবো।’

সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলের নেতৃত্বকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করেন, তিনি এখন তা বেমালুম ভুলে গেছেন। এমন বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছেন আর কখনো নাকি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ঘাটতি হবে না, লোডশেডিং জাদুঘরে পাঠাবেন, তবে এখন কী হচ্ছে? এগুলো দেখে আমাদের লজ্জা হয় আপনি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণফোরাম ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ রওশন ইয়াজদানী। সঞ্চালক ছিলেন গণফোরাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম।

আরও বক্তব্য দেন গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের, সভাপতি পরিষদ সদস্য আব্দুল হাসিব চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লতিফুল বারী হামীম, তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ মধু, ছাত্র সম্পাদক মো. সানজিদ রহমান শুভ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিবুর রহমান বুলু, ঢাকা জেলা সভাপতি আবদুল হামিদ মিয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সিনিয়র সহ-সভাপতি খলিলুর রহমান ঝান্টু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফারুক হোসেন, কামাল উদ্দিন সুমন , মশিউর রহমান বাবুল, নূর-নবী, ইসমাঈল সম্রাট, শেখ শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।