শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৬২ শতাংশ ব্যাংকের চলতি বছরের ৬ মাসে বা দুই প্রান্তিকে (২০১৭ জানুয়ারি-জুন) শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়েছে। কোন ব্যাংকের এ মুনাফা ১৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এমন আর্থিক ফলাফলে ব্যাংকের শেয়ার দরে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে ২৯টি ব্যাংকের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক হিসাব প্রকাশ হয়েছে। একমাত্র লোকসানি আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক এখনো আর্থিক হিসাব প্রকাশ করেনি। এ সময় আগের বছরের তুলনায় ১৮টি বা ৬২ শতাংশ ব্যাংকের ২০১৭ সালের ৬ মাসে ইপিএস বেড়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ইপিএস বেড়েছে ব্যাংক এশিয়ার। ব্যাংকটির ১৭৫ শতাংশ ইপিএস বেড়েছে। এরপরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭৪ শতাংশ বেড়েছে প্রাইম ব্যাংকের। ১৫৮ শতাংশ বেড়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে প্রিমিয়ার ব্যাংক।

এদিকে সবচেয়ে বেশি ইপিএস হয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের। আগের বছরের থেকে ২৬ শতাংশ বেড়ে ইপিএস হয়েছে ৭.১০ টাকা। এরপরে ব্র্যাক ব্যাংকের ২৭ শতাংশ বেড়ে ইপিএস হয়েছে ২.৬৬ টাকা, ৫ শতাংশ বেড়ে ইস্টার্ন ব্যাংকের ২.৩১ টাকা, ৭ শতাংশ বেড়ে ট্রাস্ট ব্যাংকের ২.১১ টাকা, ৫ শতাংশ কমে দি সিটি ব্যাংকের ২.১৮ শতাংশ, ৫৩ শতাংশ বেড়ে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ২.০৩ টাকা ও ২ শতাংশ কমে উত্তরা ব্যাংকের ২.০৩ টাকা হয়েছে। দুই প্রান্তিকে বা ৬ মাসে এই ৭টি ব্যাংকের ইপিএস ২ টাকার বেশি হয়েছে।

ইপিএসের ন্যায় অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ধনাত্মক (পজিটিভ)। ২৯টি ব্যাংকের মধ্যে ১৮টির বা ৬২ শতাংশ ব্যাংকের এ নগদ প্রবাহ ধনাত্মক হয়েছে। এ সময় সবচেয়ে বেশি ভালো বা ধনাত্মক নগদ প্রবাহ হয়েছে রূপালি ব্যাংকের। ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছে ১০৩.৩৬ টাকা। অপরদিকে ট্রাস্ট ব্যাংকের সবচেয়ে বেশি ঋণাত্মক ২৬.৫৮ টাকা নগদ প্রবাহ হয়েছে।

৬ মাসের আর্থিক ফলাফল প্রকাশকে কেন্দ্র করে গত ১ মাস ধরে কিছু ব্যাংকের শেয়ারদরে ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ করা যায়। এ সময় উল্লেখযোগ্য হারে রূপালি ব্যাংকের শেয়ারদর বেড়েছে। ব্যাংকটির শেয়ার দর বেড়েছে ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ২৭ শতাংশ, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২৭ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ২২ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১৩ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়ার ১০ শতাংশ ও শাহজালাল ইসলামি ব্যাংকের ৮ শতাংশ দর বেড়েছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকগুলো ২০১৬ সালের ব্যবসায় ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে। আর চলতি বছরের যে ব্যবসায় তাতে হতাশ হওয়ার কিছু নাই। এই খাতে এমন কিছু হয়নি যে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই ব্যাংকিং খাত নিয়ে চিন্তিত হওয়ার মত কিছু নাই।

চলতি বছরের ৬ মাসে সবচেয়ে বেশি হারে ন্যাশনাল ব্যাংকের ইপিএস কমেছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ব্যাংকটির ইপিএস কমেছে ৫০ শতাংশ। এরপরে ৪৫ শতাংশ কমে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক। আর ৩৯ শতাংশ কমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এবি ব্যাংক। ব্যবসায় সবচেয়ে কম ইপিএস হয়েছে স্যোশাল ইসলামি ব্যাংকের। চলতি বছরের ৬ মাসে ব্যাংকটির ইপিএস হয়েছে ০.৪০ টাকা। এরপরে এক্সিম ব্যাংকের ০.৪৪ টাকা ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ০.৪৬ টাকা টাকা ইপিএস হয়েছে। ৬ মাসে শুধুমাত্র এই ব্যাংকগুলোর ইপিএস ০.৫০ টাকার নিচে হয়েছে।