sharebazar lagoপুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার কথা ভাবছেন? অথবা দুর্বলভিত্তির কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে দুশ্চিন্তায় আছেন? ভাবছেন কীভাবে মন্দ শেয়ার বিক্রি করে ভালো কোম্পানির শেয়ার কিনবেন? বা ভালো কোম্পানিই বা বুঝবেন কীভাবে? এতসব প্রশ্ন ঘুরে ফিরছে আপনার মনে। এখানে ভালো কোম্পানি চেনার বেশ কয়েকটি উপায় আলোচনা করবো।

যা হয়তো সহায়তা করতে পারে আপনার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে সেগুলোই ভালো কোম্পানি হিসেবে পরিচিত যাদের লোকসান কম, সফলতার সঙ্গে দেশের বাজারে ব্যবসা করছে, নিয়মিত লভ্যাংশ দেয়, কয়েক বছর ধরে নিয়মিত লাভ করে চলেছে। এসব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করলে লোকসানের ঝুঁকি কম থাকে।

শুধু কোম্পানি ভালো হলেই চলবে না। যে কোনো বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগের আগে ওই কোম্পানির শেয়ারের মূল্যস্তরও বিবেচনায় নেওয়া উচিত। বর্তমানে বাজারে কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার অতি মূল্যায়িত অবস্থায় আছে। এগুলো থেকে সাবধান থাকা উচিত। ভালো কোম্পানি চিনতে হলে যেকোনো বিনিয়োগকারীর উচিত ওই কোম্পানির বিগত ৪/৫ বছরের পারফরম্যান্স খতিয়ে দেখা।

সে সঙ্গে কোম্পানির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ধারণা নেওয়া। প্রতিষ্ঠানটির স্পন্সর কারা, বর্তমান পরিচালনা পর্ষদে কারা আছেন- এসবও বিনিয়োগের আগে পর্যালোচনা করা উচিত । বর্তমান প্রেক্ষাপটে তালিকাভুক্ত যে কোনো কোম্পানির তথ্য সংগ্রহ খুবই সহজ হয়ে গেছে। ঘরে বসেই এখন বিনিয়োগকারীরা কোম্পানি সম্পর্কে জানার সুযোগ পাচ্ছেন। ৫/৬ বছর আগেও এই সুযোগ ছিল অত্যন্ত সীমিত।

প্রতিদিনের সংবাদপত্র, ওয়েবসাইট বা ডিএসইর মাসিক রিভিউ থেকে ইচ্ছে করলেই বিনিয়োগকারীরা ভালো কোম্পানি সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন। ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে কোনো বিনিয়োগকারী সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও যদি তিনি ভালো কোম্পানির শেয়ারে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করেন, তাহলে কোনো না কোনো সময় সেখান থেকে তার লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়া বিনিয়োগের আগে বিনিয়োগকারীরা যে খাতের শেয়ারে বিনিয়োগ করবেন সেই খাতের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাটিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

এদিকে বর্তমানে পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানি হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা ভুগছেন চরম আস্থা সংকটে। ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেও অনেকে লাভের মুখ দেখছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় অনেকে ব্যাংক, বীমা ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নতুন করে বিনিয়োগের উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী?

বাজারের এ অবস্থায় বিভিন্ন পোর্টফোলিও, মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ আপাতদৃষ্টিতে বিনিয়োগকারীদের জন্য কিছুটা নিরাপদ। বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। এ অবস্থায় আগের কেনা শেয়ারের পাশাপাশি বর্তমানে কম দামের বা ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার কিনে শেয়ারের কেনা দামের গড় কমিয়ে আনাই হবে বিনিয়োগকারীদের সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

গড় কমিয়ে এনে কিছুদিন অপেক্ষা করলে তার সুফল পাওয়া যেতে পারে আর্থিকভাবে শুধু ভালো কোম্পানি হলেই হবে না; বিনিয়োগের আগে দেখতে হবে কোম্পানির ব্যবস্থাপনার মান, শেয়ারপ্রতি আয় কেমন। সাধারণত শেয়ারপ্রতি আয়ের ১০ গুণের বেশি একটি শেয়ারের বাজারদর হওয়া উচিত নয়। তবে কোনো কোনো কোম্পানির ক্ষেত্রে এটি হতে পারে, যেসব কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থার মাত্রা বেশি ।

আমীর হোসেন

বিনিয়োগকারী