dse-up-dowenআমিনুল ইসলাম, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সুদিনের আভাসে স্থিতিশীলতার দিকে হাটতে শুরু পুঁজিবাজার। ফলে টানা কয়েক সপ্তাহ দরপতনের পর ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহ জুড়ে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর বৃদ্ধি পাওয়ায় সব সূচকের উন্নতি ঘটেছে। বেড়েছে টাকার অংকে লেনদেনের পরিমাণ, বাজার মূলধন ও পিই রেশিও। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘ দিন দরপতনের পর শেয়ার মূল্য অনেকটা কমে গেছে। ফলে বিনিয়োগ উপযোগী হয়ে উঠেছে দেশের পুঁজিবাজার।

যার কারণ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিদেশিরা দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে সক্রিয় হচ্ছেন। এতে করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসায় বাজারে সক্রিয় হচ্ছেন তারা। এছাড়াও বড় মূলধনীয় কোম্পানি শেয়ারের দাম বাড়ার পাশাপাশি সদ্য সমাপ্ত বিভিন্ন কোম্পানির প্রান্তিকের প্রতিবেদনে মুনাফা বাড়ায় ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে বাজার।

অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বাজারে ধারাধাহিক দরপতনের কারণে শেয়ার দর অনেক কমে যাওয়ায় অনেকে সমন্বয় করছে। তাই বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। তবে আমাদের মূল সমস্যা পুঁজিবাজার প্রতি বিনিয়োগকারীদের অস্থাহীনতা। এখন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আস্থা ফিরছে। আর এ অবস্থা ধরে রাখতে পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বাজারের কোয়ালিটি সম্পূর্ণ (ভালো) কোম্পানি অনুমোদনেরও পরামর্শ দেন।

বর্তমান বাজার প্রসঙ্গে অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী এ্যাড. মাহুমুদুল আলম বলেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক গতিতে হাটছে। বাজারে ধীরে ধীরে লেনদেন বাড়ছে। এটা বাজারের জন্য ভাল দিক। হুট করে লেনদেন বাড়া বা কমা ভাল দিক নয়। তাছাড়া  পুঁজিবাজারের বিকাশের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী বদলাতে হবে। এখানে এই বাজার নিয়ে নীতিনির্ধারক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি আছে।

অনেকে মনে করেন, পুঁজিবাজার একটা গেমলিং এর জায়গা। কেউ কেউ মনে করেন, এই যারা শেয়ার কেনাবেচা করেন শুধু তাদেরই লাভবান হওয়ার ব্যাপার। অর্থনীতিতে বোধহয় পুঁজিবাজার কোনো অবদান রাখে না। কিন্তু এর কোনোটাই সত্য নয়। পুঁজিবাজার অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পাপরলে আরও বেশি অবদান রাখতে পারবে।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সরকারের উচিত শুধু দাতাদের দিকে তাকিয়ে না থেকে দেশীয় সম্পদের মাধ্যমে বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করা। আর এ ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার হতে পারে সবচেয়ে সহায়ক। বিশ্বব্যাংকসহ কোনো দাতা সংস্থার কাছ থেকে সহায়তা না নিয়ে সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থে সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণ করছে। আর এর মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে দাতা সহায়তা ছাড়াও আমাদের পক্ষে এমন উন্নয়ন করা সম্ভব।

পুঁজিবাজার থেকে অর্থ নিয়ে বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ করলে দাতাদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না, তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়ার আশায় অপেক্ষা করে সময় নষ্ট করতে হবে না। এতে আমাদের মধ্যে আরও বেশী আত্মমর্যাদা বোধ তৈরি হবে। বিশ্বে আমাদের মর্যাদা বাড়বে, আরও বেশী সমীহ করবে আমাদের।