desh lagoশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ভ্রমণপিপাসু মানুষের পকেটে টাকা থাকুক আর নাই থাকুক, ঘোরাঘুরি বন্ধ থাকবে না। পকেটে যে কটা টাকাই থাকুক, সেটা নিয়ে কাঁধে একটি ব্যাগ ঝুলিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন। ইন্ডি ট্র্যাভেলার জানিয়েছে সস্তায় পাঁচ দেশ ঘোরার বন্দোবস্ত। একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।

থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ড শুনেই আঁতকে উঠছেন! যতই জাঁকজমক বা দামি সৈকত থাকুক, সস্তায় থাইল্যান্ড ঘোরার ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে এর জন্য আপনাকে যেতে হবে থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে। রাজধানী ব্যাংকক থেকে রাতের ট্রেন ধরে চলে যান উত্তরের চিয়া মাইতে। সেখানে পা রাখলেই বুঝবেন এখনো কম পয়সায় থাইল্যান্ডে আরাম করে থাকা এবং ঘোরা যায়।

উত্তরের বেশকিছু শহরে তিন ডলারে রাতে থাকার জন্য হোটেলে বিছানা পাবেন আর রুম পেতে হলে গুনতে হবে ছয় ডলার। তবে সস্তা দেখে ভাববেন না যে কোনোমতে থাকার ব্যবস্থা, বেশ গোছানো এবং পরিপাটি এসব হোটেল। বিলাসিতা নেই কিন্তু প্রয়োজনীয় সবকিছুই পাবেন। থাইল্যান্ডের মুদ্রায় ৩০ বাথে (এক ডলার) রেস্টুরেন্টে বসে থাই খাবার খেতে পারবেন পেট পুরে।

ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়া বললেই চোখের সামনে বালি দ্বীপের জাঁকজমক নাইট ক্লাবের কথা মনে আসে। সমুদ্রসৈকতে সময় কাটানোর জন্য অস্ট্রেলিয়া বা ইউরোপের দেশগুলো থেকে আসা পর্যটকদের পছন্দের স্থান হচ্ছে বালি। তবে এর বাইরেও ঘোরার অনেক জায়গা রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। যেমন উবুদ। দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার এটিও একটি দ্বীপ। উবুদে থাকার জন্য মন্দিরের মতো ছোট ঘর ভাড়া পাওয়া যায় ১০ ডলারে।

ইন্দোনেশিয়ার খাবারও বেশ সুস্বাদু। এক ডলারে খুব আরাম করে খাওয়া যাবে উবুদে। এ ছাড়া গিলি দ্বীপের লোম্বোকে রাত্রিকালীন বাজারে এক প্লেট সানি গোরেং (সবজি-ভাত, ডিম এবং মুরগি দিয়ে তৈরি খাবার) খেতে পারবেন মাত্র দুই ডলারে। আর যদি ইন্দোনেশিয়ান খাবার ভালো না লাগে তাহলে পশ্চিমা খাবারও পেয়ে যাবেন ছয় থেকে ১০ ডলারের মধ্যে।

কম্বোডিয়া
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সস্তায় ঘোরাঘুরির জন্য ভালো জায়গা। কম্বোডিয়ায় ঘুরতে গেলে সেটা ভালোমতোই বুঝতে পারবেন। এখনো কম্বোডিয়ার রাস্তা পুরোনো সস্তা বাস এবং মিনিভ্যান চলে অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে। দেশটির রাজধানী নম পেন অথবা সিয়াম রিয়েপ শহরে তিন থেকে পাঁচ ডলারের মধ্যে ভালো হোটেলে থাকার জন্য বিছানার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। তবে রুম পেতে চাইলে ১০ ডলার খরচ করতে হবে। থাইল্যান্ড বা ভিয়েতনামের মতো তেমন সুস্বাদু নয় কম্বোডিয়ার খাবার।

রাজধানী ফুনম পেনের স্ট্রিট ফুড খেয়ে আরাম পাবেন, বিশেষ করে রাত্রিকালীন বাজারগুলোতে। থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা তো হলো, ঘোরার জন্য যেতে পারেন আংকর ওয়াতে, সেখানে প্রচুর মন্দির পাবেন দেখার মতো। বেশ আগেকার তৈরি এসব মন্দির। আর যদি সমুদ্রের কাছাকাছি থাকতে চান, তাহলে সিহানুক্সভিল বা কো রং দ্বীপে যেতে পারেন।

নিকারাগুয়া
একসময় রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং গৃহযুদ্ধের কারণে নিকারাগুয়া ছিল অশান্ত এক দেশ। কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে। এখন পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় এক জায়গা নিকারাগুয়া। মধ্য আমেরিকার অন্যতম সুন্দর দেশ নিকারাগুয়া যেটি খুব অল্প পয়সায় ঘুরে দেখা যায়।

তবে নিকারাগুয়ার পাশের দেশ কোস্টারিকায় ঘুরতে গেলেই বাড়তি পয়সা গুনতে হবে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মতোই সস্তায় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে কোস্টারিকায়। স্যান হুয়ান দেল সুর শহরে পাঁচ ডলারে হোটেলে থাকার জন্য বিছানা পেয়ে যাবেন আর ১০ ডলারে বাথসহ রুম পেয়ে যাবেন।

তবে খেয়াল রাখবেন যদি পশ্চিমা কোনো প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন হোটেলে ওঠেন, তাহলে এর চেয়ে দ্বিগুণ দাম শোধ করতে হবে। চেষ্টা করবেন নিকারাগুয়ার স্থানীয়দের দ্বারা পরিচালিত হোটেলগুলোতে ওঠার। নিকারাগুয়ার স্থানীয় খাবারের মধ্যে প্রচলিত হচ্ছে মটরশুটি ও চাল। এই খাবারটির মধ্যে তেমন কোনো বৈচিত্র্য নেই। সকালের নাশতার জন্য এক ডলার আর রাতের খাবারে চার থেকে পাঁচ ডলার খরচ হয়ে যাবে। তবে সি ফুডের বেশকিছু আইটেম রয়েছে।

বলিভিয়া
লাতিন আমেরিকার দেশ বলিভিয়া। সময়ের সাথে তাল রেখে ধীরে ধীরে উন্নতি করছে দেশটি। কিন্তু এখনো বেশ সস্তায় সেখানে ঘোরার ব্যবস্থা রয়েছে। পাঁচ-ছয় ডলারের মধ্যে এখানে থাকার জন্য বিছানা পাওয়া যাবে। ১০ ডলারে থাকার রুম পাওয়া যাবে। বলিভিয়ার পাশে পেরুও ঘোরার জন্য ভালো জায়গা। তবে এখনো লাতিন আমেরিকার অন্য দেশগুলোর তুলনায় বলিভিয়া অনেক সস্তা।