বিএনপির কমিটিতে আসছে একঝাঁক তরুণ মুখ
শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল। দীর্ঘদিন পর হতে চলা কাউন্সিলে চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন শেষ। মহাসচিব পদে ‘ভার’ কাটতে পারে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের। নতুন মুখের গুঞ্জনও আছে। তবে স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা পরিষদসহ শীর্ষস্থানীয় অনেক পদে এবার নতুন নতুন মুখ দেখা যেতে পারে । দলের ভেতরে-বাইরে জোরালো আলোচনা চলছে যে, নির্বাহী কমিটিসহ সম্পাদকীয় পদে সাবেক ছাত্রনেতাদের অনেকে জায়গা পাচ্ছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পদ-পদবি না পেয়ে অনেক ত্যাগী ছাত্রনেতা দল থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন। এবার তাদের জন্য সুখবর আসছে। অভিযোগ আছে, দলেরই একটা অংশ এসব কর্মীকে পদবঞ্চিত করার পাশাপাশি দল থেকেও দূরে রাখতে কাজ করেন। ফলে ইচ্ছা থাকলেও এরা সামনের দিকে আসতে পারেন না।
তবে সামনের দিকে না এলেও এসব নেতার অনেকে নেপথ্যে থেকে আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন। দলীয় প্রধান এবারের কাউন্সিলে তাদের পুরস্কৃত করতে চান। বিএনপিতে জায়গা হতে পারে অঙ্গসংগঠনের অনেক শীর্ষ নেতারও। কাউন্সিল সামনে রেখে দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার এমন ঘোষণায় আশার আলো দেখছেন বিএনপির তরুণ ও সাবেক ছাত্রনেতারা।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে গুলশানের নিজ কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বলেন, “যারা আন্দোলন-সংগ্রামে ছিল, তাদের ভালো পদে রাখতে চাই। আর যারা প্রবীণ সদস্য আছেন, তারা দলকে অনেক কিছু দিয়েছেন। এখন আপনাদের উপদেষ্টা পদে দিয়ে তরুণদের দায়িত্ব্ দিতে চাই। এটা আমার ইচ্ছা।”
বিএনপিতে নতুন মুখের মধ্যে যেসব ছাত্রনেতার নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, সানাউল হক নীরু, কামরুজ্জামান রতন, নুরুল ইসলাম নয়ন, শহীদুল ইসলাম বাবুল, হাসান মামুন,আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, হাবিবুর রশিদ হাবিব, ওবায়দুল হক নাসির, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, হায়দার আলী লেলিন, আব্দুল মতিন, ওমর ফারুক শাহীন, আবু বকর, দুলাল হোসেন, রফিকুল ইসলাম রাসেল, শেখ মোহাম্মদ শামীম, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, কামাল আনোয়ার আহমেদ, আনোয়ার হোসেন টিপু, সেলিনা সুলতানা নিশিতাসহ আরো অনেকের নাম।
ছাত্রনেতা ছাড়াও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনে নতুন নেতৃত্ব তৈরির লক্ষ্যে এসব সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের বিএনপিতে নেয়া হবে বলে জানা গেছে। সে ক্ষেত্রে যুবদলের মধ্যে যাদের নাম আলোচনায় আছে সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নীরব, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক, মোরতাজুল করিম বাদরু, হামিদুর রহমান হামিদ, মামুন হাসান, রফিকুল আলম মজনু, এস এম জাহাঙ্গীর, ফরহাদ হোসেন আজাদ, মীর নেওয়াজ আলীসহ আরও অনেকের নাম।
আর সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল নিজে থেকেই যুবদল ছেড়ে দেয়ার কথা জানিয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের মধ্য থেকে বিএনপিতে আসতে পারেন এমন নেতাদের মধ্যে মুহাম্মদ মুনির হোসেন, আলী রেজাউর রহমান রিপন, সাইফুল ইসলাম পটু, ইয়াসিন আলী, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, হাজি মনিরদের নাম।
এ ছাড়া অন্যান্য সংগঠন থেকেও কেউ কেউ বিএনপিতে আসতে পারেন এমন গুঞ্জনও আছে। এর বাইরে বিএনপিমনা পেশাজীবীদেরও কেউ কেউ মূল দলে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। শোনা যাচ্ছে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, সাবেক ফুটবলার আমিনুল ইসলাম, কণ্ঠশিল্পী রুমানা ইসলাম কনক চাঁপা, ন্যান্সির কথা।
বিএনপির নির্বাহী কমিটি থেকে রাশেদা আক্তার হীরা, হেলেন জেরিন খান, নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আক্তার, রেহেনা আক্তার রানু, শ্যামা ওবায়েদ, ব্যারিস্টার নওশার জামিরসহ বেশ কয়েকজন সম্পাদকীয় পদে আসতে পারেন বলে দলে গুঞ্জন আছে।
এসব খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন,“নতুন নেতৃত্ব তৈরি এবং নেতৃত্বের বিকাশের জন্য নতুনদের সুযোগ দিতে হবে। আমাদের পরে যারা রয়েছে; যেমন ছাত্রদল, যুবদলসহ অন্যান্য সংগঠন থেকে যারা আসছে, তাদের জন্য তো জায়গা করে দিতে হবে। আমরা যারা বৃদ্ধ হয়ে গেছি কিংবা সেদিকে ধাবিত হচ্ছি, আমাদেরও এ বিষয়ে খেয়াল করতে হবে। এ কারণে এ বছর ‘এক নেতার এক পদ’ নীতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হলেও সূচনা হবে। এতে নতুনদের আসার ক্ষেত্র তৈরি হবে।” সুত্র: ঢাকাটাইমস