আ’লীগ সরকারের ছয় চ্যালেঞ্জ, সমস্যায় জর্জরিত অর্থনীতি
শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকার টানা চার মেয়াদে শপথ নিয়েছে গত বৃহস্পতিবার। নতুন দায়িত্ব নেওয়া এ সরকারের সামনে মোটাদাগে ছয়টি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করেই সরকারকে সামনের দিকে এগোতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে, দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখা, অর্থনৈতিক চাপ সামলে গতি সচল রাখা, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা, অর্থ পাচার ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধ করা, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন, সরকারের ইমেজ বাড়ানো এবং সুশাসন নিশ্চিত করা।
একই সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যে ১১টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনি ইশতেহার দিয়েছিল সেগুলো বাস্তবায়ন করা। এর মধ্যে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে। সরকারের একাধিক মন্ত্রী, সাবেক আমলা, অর্থনীতিবিদ, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এমনটাই মনে করেন।
কারণ নানা সমস্যায় জর্জরিত দেশের অর্থনীতি। ডলার সংকট, রিজার্ভে টান, খেলাপি বৃদ্ধি, তারল্য সংকট ও মূল্যস্ফীতির মতো ঘটনার মধ্যে শপথ নিয়েছে নতুন সরকার। দম ফুরাতে যাওয়া এই অর্থনীতি পুনরুদ্ধারই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার আলোচনার মধ্যে চাপে পড়া বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংককে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে সুশাসন ফিরিয়ে আনা জরুরি বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
তারা বলছেন, বর্তমানে দেশে ব্যাংক ব্যবস্থায় সুশাসনের বেশ অভাব। ফলে নানা কেলেঙ্কারিতে জড়াচ্ছে ব্যাংকগুলো। ফলে বেকায়দার পড়ছে দেশের অর্থনীতি। বাংলাদেশ ব্যাংক এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদনে খেলাপি ঋণের যে তথ্য প্রকাশ করছে, সেটি বজায় রাখার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছেন। এ বিষয়ে যেসব আইন করা হয়েছে, সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে হবে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার কমে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, এ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। সেই সঙ্গে তাদের আনুমানিক হিসাব, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ শতাংশ।
জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস’ বা ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা’ শীর্ষক ষান্মাসিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্ক এ তথ্য দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ; আগের অর্থবছরেও জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা একই ছিল। সাময়িক হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংক বলছে, চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকবে। মূলত ব্যক্তি মানুষের ভোগব্যয়ের কারণে মূল্যস্ফীতির হার বাড়তি থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নমুখী থাকায় আমদানি নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে এবং সে কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির চাপ কমলে প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা বাড়বে। আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
দেশের রপ্তানি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের মন্তব্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না এবং বিষয়টি প্রবৃদ্ধির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এ ছাড়া সদ্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনের আগে কিছু সময় অনিশ্চয়তা ছিল, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগে যার প্রভাব পড়ে থাকতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ১ শতাংশ।
তাদের আনুমানিক হিসাব, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তারা বলছে, আমদানি নিষেধাজ্ঞা, উপকরণ ও জ্বালানির উচ্চমূল্য আর তার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান বাহ্যিক ও আর্থিক চাপের প্রভাবে প্রবৃদ্ধির হার কমে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে মূল্যস্ফীতির সূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখী। মূলত খাদ্যের উচ্চমূল্য ও মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে মুদ্রানীতির রাশ টেনে ধরা হয়। সেই সঙ্গে লেনদেনের ভারসাম্যে প্রভাব পড়ে, টান পড়ে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে। আর্থিক খাত আরও দুর্বল হয়ে পড়ে এবং খেলাপি ও সম্ভাব্য খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যায়।
এদিকে সমপ্রতি জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ শতাংশ। নতুন বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামবে, তবে ২০২৫ সালে তা কিছুটা বেড়ে ৫ দশমিক ৮ শতাংশে উঠতে পারে।
অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, অর্থনীতির সামপ্রতিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দিয়েছি। অর্থনীতি নিয়ে আমার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ একই। ঋণের সুদহারকে আরও কিছুটা নমনীয় করতে হবে। মানি মার্কেটের জন্য যে সুদহার করিডোর করা হয়েছে, সেটার উৎকর্ষতা আরও বাড়াতে হবে। স্মার্ট রেট পদ্ধতি বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে এবং সেটাকে আরও কিছুটা নমনীয় করা যায় কিনা—সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। বর্তমানে ডলারের বিপরীতে টাকার মান নির্ধারণ পদ্ধতি পাল্টানোরও পরমর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, বিনিময় হারকে বাজারমুখী করতে পারলে বৈদেশিক মুদ্রার জোগান বাড়বে। এখন জোগান বাড়ানোটা মুখ্য বিষয়। রপ্তানি আয়ের যে অংশটুকু দেশে আসছে না, সেটিও দেখতে হবে। অনেকেই প্রত্যাশা করছেন ডলারের দাম আরও বাড়বে। তাই হয়তো অনেক আয় দেশে আসছে না। এগুলোও চিহ্নিত করতে বলেছি।
ব্যাংক খাতে মন্দ ঋণ কমানোর ওপর জোর দিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদনে খেলাপি ঋণের যে তথ্য প্রকাশ করছে, সেটি যেন বজায় থাকে। এ বিষয়ে যেসব আইন করা হয়েছে-সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে হবে।
তবে টাকার মূল্যমান যে চাহিদা ও জোগানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা উচিত, তা আমরা বলি। এটা করতে গেলে মুদ্রানীতির সঙ্গে আর্থিক নীতির সমন্বয় থাকা যে জরুরি, তা-ও আমরা বলে থাকি। তা না হলে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
আবার টাকার মূল্য অবনমনের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে, তা মোকাবিলা করতে হয় আর্থিক নীতির মাধ্যমে। আর্থিক নীতির সঙ্গে সংযোগ থাকতে হয় মুদ্রানীতির। আর্থিক নীতি প্রণয়ন অর্থ মন্ত্রণালয়ের মূল কাজের মধ্যে পড়ে। মুদ্রানীতি প্রণয়ন বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ; মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণও বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম কাজ। এছাড়া ডলার সংকট, রিজার্ভ ধরে রাখা, খেলাপি ঋণ কমানো এবং ব্যাংকের তারল্য সংকট এবং অর্থপাচারসহ নানা সূচকে কাজ করা সুযোগ দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।
ডলার সংকট: বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে যেসব সমস্যার মুখে পড়েছে, এর মূলে রয়েছে মার্কিন ডলারের সংকট। নীতিনির্ধারকরা মনে করেছিলেন, ডলারের সংকট এবং এর দাম বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা সাময়িক। তারা দীর্ঘদিন ধরে বলছেন, অচিরেই এর সমাধান হবে। কিন্তু সেই ‘অচিরেই’ আর আসছে না। ডলার সংকট ও দর বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন, বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এর ফলে উচ্চ মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। জিনিসপত্রের বাড়তি ব্যয় মেটাতে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ পরিস্থিতি অর্থনীতিকে বিপদে ফেলছে।
এমনকি রিজার্ভ থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ঋণ ও উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়। ২০২১ সালের শেষ দিকে অর্থনীতিতে করোনা-পরবর্তী বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়। তখন আমদানির চাহিদা বাড়ে। অন্যদিকে, রেমিট্যান্স কমে যায়। এর প্রভাবে কমতে থাকে রিজার্ভ। এর মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অর্থনীতিতে নতুন সংকট তৈরি করে। সংকট কাটাতে এখন কঠিন শর্তে আইএমএফের ঋণ নিতে হচ্ছে সরকারকে। গত দুই বছরে ২ হাজার ৩৫০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর পরও সংকট থামানো যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ব্যাংকগুলোর কাছে ১১০ টাকা দরে ডলার বিক্রি করছে। গত বছরের এ সময়ে বিক্রি করছিল ৯৫ টাকা দরে।
খেলাপি ঋণ: বর্তমান বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণ। অনেক পদ্ধতি, কৌশল ও প্রচেষ্টা অবলম্বনের পরও তা আজও হাতের নাগালের বাইরে। সামপ্রতিককালে দেখা গেছে, ব্যাংক খাতের ১২-১৩ শতাংশই ঋণ খেলাপি হয়েছে, যা টাকার অঙ্কে লাখো কোটিতে পৌঁছেছে অনেক আগেই। আর এই লাগামহীন খেলাপি ঋণের জন্যই অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে এক ধরনের বন্ধ্যত্ব।
তারল্য সংকট: বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত তীব্র তারল্য সংকটে পড়েছে। এতে বেশিরভাগ ব্যাংক তাদের কার্যক্রম চালাতে কল মানি মার্কেট ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংক রেপো সুদহার বাড়ালেও ব্যাংকগুলো ঋণ নেয়া কমায়নি বলে জানিয়েছেন এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
গত ৩ জানুয়ারি ৩২টি ব্যাংক ও তিনটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) সাত দিনের রেপো সুবিধা, ১৪ দিনের ইসলামী ব্যাংকের তারল্য সুবিধা ও একদিনের তারল্য সুবিধার আওতায় ২০ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এর একদিন আগে ২৭টি ব্যাংক ও একটি এনবিএফআই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আরও ১৩ হাজার ৪২২ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল।
একই সময়ে কল মানি রেট ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। কল মানি হলো ১ থেকে ১৪ দিনের ম্যাচিউর সময়কালের একটি ন্যূনতম স্বল্পমেয়াদি ঋণ, যা চাহিদা অনুযায়ী পরিশোধ করতে হয় এবং আন্তঃব্যাংক লেনদেনের জন্য ব্যবহূত হয়। গড় ওভারনাইট কল মানি রেট দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ, যা গত বছরের জুলাইয়ের একই দিনে ছিল ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত কল মানি রেট তখন বৃদ্ধি পায়, যখন ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে পড়ে ও বাজার থেকে অর্থ ধার করে।
বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে সংকট, আমানতের ধীরগতি, কিছু শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের প্রতি আস্থার অভাব, রেকর্ড খেলাপি ঋণ ও ঋণ আদায়ে ধীরগতি ইত্যাদি তারল্য সংকটের প্রধান কারণ। তারা আরও বলেন, তবে দেশে চলমান মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবিলায় সমপ্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক পলিসি রেট বাড়িয়েছে, এতে তারল্য সংকট আরও প্রবল হয়েছে। গত অক্টোবরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পলিসি রেট ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ করার পর থেকে কল মানি রেট দ্রুত বাড়তে থাকে।
মূল্যস্ফীতি: এরপর নভেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রেপো রেট নামে পরিচিত পলিসি রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ করে। ওই মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ, যা চলতি অর্থবছরে সরকারের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৬ শতাংশের চেয়ে অনেক বেশি।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, সমপ্রতি সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদহার বেড়ে যাওয়ায় অর্থ সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ আমানতের হারের চেয়ে ২ শতাংশ বেশি সুদ পাওয়ায় গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলন করে সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করছেন। আমানত সংগ্রহে সরকার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ কারণে ব্যাংকিং খাত এখন চরম তারল্য সংকটে ভুগছে।’
যমুনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা ইলিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঋণগ্রহীতারা ঋণের অর্থ ফেরত না দেয়ার অজুহাত হিসেবে বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছেন। এতে ব্যাংকগুলোর তারল্য পরিস্থিতি আরও প্রকট হয়েছে।