শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজারে বর্তমানে চরম এক মন্দার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিনের টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীরা একরকম পিছু হটছেন। ক্রমাগত লোকসানে ক্ষতবিক্ষত হয়ে অনেকেই পুঁজিবাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ডিএসইএক্স প্রধান সূচক এখন পাঁচ বছর আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। একই সঙ্গে কমে গেছে দৈনিক লেনদেনও, যা এখন আশঙ্কাজনকভাবে নিম্নমুখী। গত বছরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাজারে কিছুটা আশার সঞ্চার হলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। বাজেটকে ঘিরে নতুন করে কিছু আশা জেগেছিল বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।

বিনিয়োগকারীরা ভেবেছিলেন, বাজেটে সরাসরি বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো প্রণোদনা আসবে, যা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়ক হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ঘোষিত বাজেট বিনিয়োগকারীদের সে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের বাজেট প্রস্তাবনায় পুঁজিবাজারে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কিছু সুবিধা থাকলেও, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য কার্যকর ও প্রত্যক্ষ কোনো প্রণোদনা রাখা হয়নি।

তবে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিলো বাজেটে পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে কার্যকর ও স্পষ্ট উদ্যোগ থাকবে, থাকবে মূলধনি মুনাফা বা লভ্যাংশ আয়ে কর রেহাই। তবে ঘোষিত বাজেটে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো উদ্যোগ না থাকায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারের লেনদেনে। বাজেট ঘোষণার পরের দিনেই পুঁজিবাজার ডিএসইতে গত ৯ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেনের রেকর্ড হয়েছে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ও অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই সর্বনিম্ন লেনদেন।

এদিকে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। টাকার পরিমানে লেনদেন কমে তলানিতে নেমেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৬৬৪ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৭৪৬ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৪ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯৩ টির, দর কমেছে ২৩৯ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২ টির। ডিএসইতে ২২৯ কোটি ৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৭৬ কোটি ৩০ লাখ টাকার ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৯১ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৭৬ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৯ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৮১ টির এবং ৩৬ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৯ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।