শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ব্যাংকাস্যুরেন্স চালুর গেজেট নোটিফিকেশন বা প্রজ্ঞাপন জারির দুদিনের মাথায় তা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন-বিআইএ।

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বিমা কোম্পানিগুলোকে এই তথ্য জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, ব্যাংকাস্যুরেন্স গাইডলাইন্স এর কতিপয় বিষয়ে সংশোধন করা প্রয়োজন বিধায় ব্যাংকাস্যুরেন্স নীতিমালা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) তফসিলভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বিমা কোম্পানির করপোরেট এজেন্ট হিসেবে বিমাপণ্য বিক্রয় কর্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রজ্ঞাপন জারি করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

ব্যাংকাস্যুরেন্স চালুর চিঠিতে বলা হয়, তফসিলভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য ‘ব্যাংকাস্যুরেন্স গাইডলাইন’ প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিমা কোম্পানিগুলোর জন্য ‘করপোরেট এজেন্ট (ব্যাংকাস্যুরেন্স) নির্দেশিকা’ প্রণয়ন করেছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

চিঠিতে বলা হয়, সরকার এই গাইডলাইন ও নির্দেশিকা অনুমোদন করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিমাপণ্য বিক্রির কার্যক্রম পরিচালনা করতে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৭(১) (ল) ধারার বিধান মোতাবেক প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে।

চিঠিটি বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন (বিআইএ)’র নজরে আসলে তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ও বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সাথে ফোনে আলোচনা করেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন।

‘ব্যাংকাসুরেন্স গাইডলাইন্স’ এর কতিপয় বিষয়ে সংশোধন করা প্রয়োজন বিধায় গেজেট নোটিফিকেশনটি সাময়িকভাবে স্থগিত করার জন্য তাদেরকে অনুরোধ করা হলে তারা সম্মতি প্রদান করেছেন বলে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ব্যাংকাস্যুরেন্স নির্দেশিকা অনুযায়ী বিমাপণ্য বিক্রির জন্য ব্যাংক বিমা কোম্পানির করপোরেট এজেন্ট হিসেবে কাজ করবে। এক্ষেত্রে একটি ব্যাংক সর্বোচ্চ ৪টি লাইফ ও ৪টি নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সাথে চুক্তি করতে পারবে। অপরদিকে একটি বিমা কোম্পানি সর্বোচ্চ ৪টি ব্যাংকের সাথে ব্যাংকাস্যুরেন্স চুক্তি করতে পারিবে।

করপোরেট এজেন্ট হিসেবে ব্যাংক তার গ্রাহকের নিকট লাইফ এবং নন-লাইফ বিমা কোম্পানির বিমা পরিকল্প বিক্রির বিপণন চ্যানেলসমূহ যেমন: শাখা, টেলিমার্কেটিং, এজেন্ট ব্যাংকিং, ওয়েবসাইট, অ্যাপস ইত্যাদির মাধ্যমে বিমা সুবিধার প্রস্তাবনা, বিজ্ঞাপন, বিক্রয়, বিতরণ অথবা বাজারজাতকরণ করতে পারবে। ব্যাংকাস্যুরেন্স গাইডলাইন্স অনুসারে, নন-লাইফ বিমা খাত ব্যাংকের এসএমই এবং রিটেইল গ্রাহকদের ব্যাংকাস্যুরেন্সের মাধ্যমে বিমার আওতায় আনতে পারবে।

তবে করপোরেট গ্রাহকরা ব্যাংকাস্যুরেন্সের আওতায় আসবে না। অর্থাৎ করপোরেট ফায়ার, মেরিন কার্গো, মেরিন হাল, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিবিধ বিমা পলিসি ব্যাংকাস্যুরেন্সের আওতামুক্ত থাকবে।

ব্যাংকাস্যুরেন্সের গ্রাহকের বিষয়ে গাইডলাইন্সে বলা হয়েছে, ব্যাংকের হিসাব বা কার্ডধারী গ্রাহককে ব্যাংকাস্যুরেন্স পণ্য বিক্রির প্রস্তাব করতে পারবে ব্যাংক। ব্যাংকের গ্রাহক নয় এমন কোন ব্যক্তির নিকট ব্যাংকাস্যুরেন্সের অধীন বিমাপণ্য বিক্রির প্রস্তাব করা যাবে না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত কেওয়াইসি পরিপালনপূর্বক ব্যাংকের গ্রাহক তার পরিবার যেমন: পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রী এবং পুত্র-কন্যাদের জন্য বিমাপণ্য ক্রয় করতে পারবে।

উল্লেখিত নির্দেশনা পরিপালনপূর্বক ব্যাংকাস্যুরেন্স পণ্য রিটেইল এবং এসএমই গ্রাহকদের প্রত্যক্ষ বিক্রয় মডেল ব্যবহার করে বিক্রয় প্রস্তাব করা যাবে।এছাড়াও ব্যাংকাস্যুরেন্স গ্রুপ-লাইফ এবং গ্রুপ-হেলথ পণ্যসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত কেওয়াইসি পরিপালনপূর্বক প্রত্যক্ষ বিক্রয় মডেল অনুসরণ করে করপোরেট সংস্থাসমূহকে বিক্রির প্রস্তাব করা যাবে।