শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ৯টি কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিগুলো হলো: অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, আফতাব অটোমোবাইলস, ইনটেক অনলাইন, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার, তাল্লু স্পিনিং, ডেল্টা স্পিনার্স, ফু-ওয়াং ফুডস, ফাইন ফুডস ও সেন্ট্রাল ফার্মাসিটিউক্যালস লিমিটেড।

তবে বাকি ২০টি কোম্পানিকে আর সময় না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।কোম্পানিগুলো হলো: অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যাল, অগ্নি সিস্টেম, আলহাজ্ব টেক্সটাইল, অ্যাপোলো ইস্পাত, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইল, ফ্যামিলিটেক্স, ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ফু-ওয়াং সিরামিকস, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, ইমাম বাটন, ইনফরমেশন সার্ভিস নেটওয়ার্ক, মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডায়িং, নর্দান জুট, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, ফার্মা এইড, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, স্যালভো কেমিক্যালস, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ এবং কে অ্যান্ড কিউ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

এ বিষয় বিএসইসি’র কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ জানান, ‘যেসব কোম্পানি শেয়ার ধারণের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়নি তাদের আর সময় দেয়া হবে না। নির্দিষ্ট সময় পরে কোম্পানিগুলোর পর্ষদ পুনর্গঠন করা হবে।’

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে দেশের পুঁজিবাজারে মহাধসের পর সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে আসে অনেক উদ্যোক্তা-পরিচালকের শেয়ার বিক্রির তথ্য। তাদের বেশিরভাগই নামমাত্র শেয়ার নিয়ে দাপটের সঙ্গে বসতেন পরিচালনা পর্ষদে। পর্যাপ্ত শেয়ার না থাকায় কোম্পানি পরিচালনায় তাদের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করেন, মালিকানার অংশ কম থাকায় উদ্যোক্তা-পরিচালকরা যেনতেনভাবে কোম্পানি পরিচালনা করেন, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।

এসব আলোচনা আমলে নিয়ে ২০১১ সালে পর্ষদে থাকার শর্ত হিসেবে পরিচালকদের ব্যক্তিগতভাবে দুই শতাংশ আর সম্মিলিতভাবে ৩০ শেয়ার ধারণ বাধ্যতামূলক করে বিএসইসি। কিন্তু এ নির্দেশনাকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যান বেশ কয়েকটি কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালক। শুরুতে আদেশটি আদালতে স্থগিত হলেও, শেষ পর্যন্ত রায় যায় বিএসইসির পক্ষেই।

কিন্তু নির্দেশনাটি বাস্তবায়নে কার্যকর কোনো উদ্যোগ ছিল না তৎকালীন বিএসইসির। দায় সেরেছে কয়েক দফা চিঠি চালাচালি করেই। ফলে লাভের লাভ হয়নি কিছুই। উল্টো নতুন তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকরাও দেদারছে বেচেছেন নিজেদের নূন্যতম শেয়ার। কিন্তু এর বিরুদ্ধে রহস্যজনকভাবে নিরব ছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

অবশ্য চলতি বছর মে মাসে পুনর্গঠনের পরপর নির্দেশনাটি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয় বিএসইসি। গত ২৯ জুলাই ৩০ শতাংশ শেয়ার না থাকায় প্রায় অর্ধশত কোম্পানিকে দুমাসের আল্টিমেটাম দেয় সংস্থাটি। এরপর এক দফা সময় বাড়িয়ে, তা ৩০ নভেম্বর করা হয়।

এ সময়ের মধ্যে ১৫ কোম্পানি শেয়ার কিনে ন্যূনতম শেয়ার ধারণের শর্ত পূরণ করে। তবে দুই শতাংশ শেয়ার না থাকায় গত ২০ সেপ্টেম্বরে ৯ কোম্পানির ১৭ পরিচালকের পদ শূন্য ঘোষণা করে সংস্থাটি। বিএসইসির বেঁধে দেয়া সময় পার হলেও, শেয়ার কেনার সুযোগ চেয়ে সুনির্দিষ্ট আবেদন না করায় ২০ কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়ে এগোচ্ছে বিএসইসি।