শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা:  গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের পর রেকিট বেনকিজারকেও কিনতে যাচ্ছে ইউনিলিভার- এমন গুঞ্জন উঠেছে দেশের শেয়ারবাজারে। বহুজাতিক কোম্পানিটির মালিকানা বদল নিয়ে কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও খবর প্রকাশিত হয়েছে। এতেই দেশের শেয়ারবাজারে রেকিটের শেয়ারদর বাড়ছে তরতরিয়ে। দেশের শেয়ারবাজারে শুধু রেকিট বেনকিজার তালিকাভুক্ত।

মালিকানা বদলের গুঞ্জনে গত ৮ নভেম্বর থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ২০ দিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে রেকিট বেনকিজারের দর প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছিল। কিছুটা বিরতি দিয়ে গত বৃহস্পতিবার থেকে নতুন করে দর বাড়তে শুরু করেছে। সর্বশেষ তিন দিনে ৩৩১ টাকা দর বেড়ে শেয়ারটি সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে; শতকরা হিসেবে বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। গতকাল সর্বশেষ দুই হাজার ৪৩৪ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

জনপ্রিয় অনেক ব্র্যান্ডের কোম্পানি ইউনিলিভার বাংলাদেশ রেকিট বেনকিজার কিনে নিলে শেয়ারটির দর আরও বাড়বে- এমন ধারণা শেয়ারবাজার-সংশ্নিষ্টদের। ফলে এখন যাদের কাছে এর শেয়ার রয়েছে, তারা বর্তমানের বাড়তি দামেও ছাড়তে রাজি নন। এতে শেয়ারটির ক্ষেত্রে বিক্রেতাশূন্য অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে রেকিট বেনকিজারের কোম্পানি সচিব নাজমুল আরেফিন জানান, এ বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই। সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে শেয়ারদর বাড়তে পারে এমন অপ্রকাশিত কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্যও কোম্পানির কাছে নেই। যোগাযোগ করা হলে ইউনিলিভার তার জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান ইমপ্যাক্ট পিআরের মাধ্যমে জানিয়েছে, এ বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি নয়।

উভয় কোম্পানি সূত্রে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য না মিললেও শেয়ারবাজার ও অর্থনীতিবিষয়ক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে রেকিট বেনকিজার কেনাবেচার বিষয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে। রেকিটের ব্যবসা কিনে নিতে যাচ্ছে ইউনিলিভার- এমন খবর প্রথম প্রকাশ করে শেয়ারবাজারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ ও বিশ্নেষণবিষয়ক গণমাধ্যম `সিকিং আলফা`। এর প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিকবিষয়ক গণমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিটের বিশ্নেষক ডেভিট জেকশন।

গত ১০ সেপ্টেম্বর সিকিং আলফার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ইউনিলিভার রেকিট বেনকিজারের গৃহস্থালি স্বাস্থ্য সুরক্ষা (হোম হাইজেনিক) পণ্য উৎপাদন ও বিপণনকেন্দ্রিক ব্যবসা কেনার আলোচনা শুরু করেছে। এই অধিগ্রহণের সম্ভাব্য মূল্য হবে দুই হাজার ১৯০ কোটি ইউরো বা আড়াই হাজার কোটি ডলার। তবে ওই খবরে এ বিষয়ে রেকিট বা ইউনিলিভার সংশ্নিষ্ট কারও বক্তব্য ছিল না। এ তথ্যের সত্যতাও কেউ নিশ্চিত করেনি। খবরটিতে বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশের রেকিটের ব্যবসা অধিগ্রহণ বিষয়ে পৃথক কোনো তথ্য ছিল না।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে আরও জানা গেছে, সর্বশেষ খবরটি প্রকাশের আগে গত বছর রেকিট বেনকিজার ইস্যুতে অপর একটি খবর ছিল। ওই খবরে বলা হয়েছিল, রেকিট তার খাদ্যপণ্য ব্র্যান্ড (ফুড ইউনিট) বিক্রি করার উদ্যোগ নিলে ইউনিলিভার তা সোয়া দুই বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যে কিনে নেওয়ার প্রস্তাব করে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাককোরমিক অ্যান্ড কো সর্বোচ্চ ৪২০ কোটি ডলার প্রস্তাব করে তা কিনে নেয়।