share lagoশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে আইন করেও তৈরি করা যায়নি মার্কেট মেকার। যে কারণে দীর্ঘদিনেও গতিশীল হয়নি পুজিবাজার। ১৫ বছরে আগে মার্কেট মেকার নামের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী তৈরি করতে আইন প্রণয়ন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। শুরুর দিকে কিছু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী মার্কেট মেকার হওয়ার আগ্র্রহ দেখালেও এখন আর এ নিয়ে তেমন কোন আগ্রহ নেই। এর ফলে পুঁজিবাজারে বিরাজ করছে অস্থিরতা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত মূলধন ও দক্ষতার অভাবেই মার্কেট মেকার গড়ে ওঠেনি। কিন্তু বাজারের স্বার্থে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর শেয়ারবাজারের ন্যায় আমাদের দেশেও মার্কেট মেকার গড়ে ওঠা প্রয়োজন। তাই মার্কেট মেকার সৃষ্টি করতে ফের চেষ্টা শুরু করেছে বিএসইসি। এজন্য বিদ্যমান আইনে সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্টদের মতে, মার্কেট মেকার হলো পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট এমন প্রতিষ্ঠান, যারা শেয়ার কেনাবেচার মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের যৌক্তিক দর প্রতিষ্ঠা এবং বাজারকে গতিশীল করতে কাজ করে। মন্দা বাজারে যখন নতুন বিনিয়োগ করার কেউ থাকে না, তখন মার্কেট মেকার প্রতিষ্ঠান শেয়ার কিনে বাজারকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করে।

একই সঙ্গে বাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতেও সহায়তা করে। আইন অনুযায়ী, বাণিজ্যিক ব্যাংক, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা কোম্পানি, মার্চেন্ট ব্যাংক, স্টক ব্রোকার বা স্বতন্ত্র কোনো প্রতিষ্ঠান মার্কেট মেকারের লাইসেন্স নিয়ে কার্যক্রম চালাতে পারে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা মার্কেট মেকার গড়ে না ওঠার কারণ হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মূলধন স্বল্পতা, ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমাবদ্ধতা এবং বাজারে আর্থিক জ্ঞান ভিত্তিক বিনিয়োগ প্রবণতা না থাকাকে দায়ী করছেন। তারা বলছেন, মার্কেট মেকার হওয়ার জন্য বিপুল অর্থ থাকা আবশ্যক।

কিন্তু পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা নির্ধারণ করে দেওয়ায় তাদের বা তাদের সহযোগী মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউসের পক্ষে মার্কেট মেকারের ভূমিকা নেওয়া কঠিন। তার ওপর ২০১০ সালের ধসে বড় অঙ্কের লোকসানে পড়ায় বাজারের প্রতি তাদের আগ্রহই কমে গেছে। এদের বাইরে মার্কেট মেকারের ভূমিকা নেওয়ার মতো খুব কম প্রতিষ্ঠানই আছে। এছাড়া বাজারে সার্বিক লেনদেন কম হওয়া এবং লেনদেন খরচ তুলনামূলক বেশি হওয়ায় এ বাজারে একই সঙ্গে ক্রেতা ও বিক্রেতার ভূমিকা নেয়া ঝুঁকিপূর্ণ।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মার্কেট মেকার হিসেবে কার্যক্রম চালাতে উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন পোর্টফোলিও ম্যানেজার থাকা আবশ্যক। কিন্তু আমাদের দেশে তারও অভাব রয়েছে। যার সুষ্পষ্ট উদাহরণ হলো সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি পরিচালিত মিউচুয়াল ফান্ডের আয়ের পরিস্থিতি। বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, অনেক ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউস বা সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি শুরুর দিকে এ ব্যবসায় আগ্রহী হলেও এখন পর্যন্তÍ কেউ লাইসেন্স নেয়নি।