dse-cse lagoআমীনুল ইসলাম, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: দীর্ঘদিন পর পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহ কিছুটা বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন ২২৬ কোটি টাকা বেড়েছে। আর প্রতিদিনের গড় লেনদেন বেড়েছে ৬৪ কোটি টাকা।  তবে অতিরিক্ত টাকার প্রবাহ ডিএসইর বাজার মূলধন ও মূল্যসূচকে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারেনি। উল্টো গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন ২ হাজার কোটি টাকা কমেছে। আর মূল্যসূচক কমেছে ৩১ পয়েন্ট।

জানা গেছে, গত সপ্তাহে ৪ দিনে ডিএসইতে ২ হাজার ৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৫০৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে ৪ দিনে ১ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। প্রতিদিন গড়ে ৪৪৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। এ হিসেবে গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ২২৬ কোটি টাকা। শতকরা হিসাবে যা ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আর প্রতিদিনের গড় লেনদেন বেড়েছে ৬৪ কোটি টাকা।

বাজার বিশ্লেষনে জানা গেছে, দেশের পুঁজিবাজারে গেল সপ্তাহে বেশিরভাগ সময় নেতিবাচক ধারা অব্যাহত ছিল। ফলে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে কমেছে সব ধরনের সূচকের পাশাপাশি লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর। একই সঙ্গে হ্রাস পেয়েছে বাজার মূলধন ও পিই রেশিও। তবে বেড়েছে উভয় বাজারে বেড়েছে টাকার অংকের লেনদেনের পরিমাণ। সপ্তাহ শেষে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গড় টার্নওভার ছাড়িয়েছে ৫০০ কোটি টাকা।

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা, দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গেল সপ্তাহে প্রথম কার্যদিবস রোববার (২১ আগস্ট) লেনদেন শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ২৩ হাজার ৮ কোটি টাকায় এবং শেষ কার্যদিবসে বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) লেনদেন শেষে বাজার মূলধন কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৫৮ কোটি টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ।

এদিকে ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। যা এর আগের সপ্তাহের চেয়ে ২২৬ কোটি বা ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেশি। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭৭৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। গত সপ্তাহে ডিএসইতে গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হয়েছে ৫০০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। যা তার আগের সপ্তাহে চেয়ে ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেশি।

আগে সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৪৪৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩০ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৫৫৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে এবং শরীয়া সূচক ডিএসইএস ১৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১০৭ পয়েন্ট এবং ডিএস৩০ সূচক ১৭ পয়েন্টে কমে ১ হাজার ৭৪৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩২৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২৬টির, কমেছে ১৭৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির আর লেনদেন হয়নি ২টি কোম্পানির শেয়ার। সপ্তাহের ব্যবধানে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) শূন্য দশমিক ৩৪ শতাংশ কমে ১৪ দশমিক ৭৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিকে গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৭৪ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৮৮ শতাংশ, সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স কমেছে শূন্য দশমিক ৭২ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক কমেছে ১ দশমিক ১৩ শতাংশ।

সিএসইতে গড়ে মোট লেনদেন হয়েছে ২৮১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০১টির, কমেছে ১৫৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির। টাকার অংকে মোট লেনদেন হয়েছে ১০০ কোটি ২৬ লাখ টাকা। দুই সপ্তাহ আগেও ডিএসইতে লেনদেনে খরা চলছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা বেড়েছে। বতর্মানে প্রতিদিনের গড় লেনদেন ৫শ’ কোটি টাকার ওপরে চলে এসেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কিছুটা বেড়েছে। তবে গত সপ্তাহে বাজারে মূল্যসূচক কমেছে। সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর ব্রডসূচক ছিল ৪ হাজার ৫৮৫ পয়েন্ট। সপ্তাহ শেষে তা কমে ৪ হাজার ৫৫৪ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এ হিসেবে আলোচ্য সময়ে সূচক কমেছে ৩১ পয়েন্ট। শতকরা হিসেবে যা দশমিক ৬৭ শতাংশ।