share lagoপ্রশান্ত কুন্ডু, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে নতুন করে বাজারমুখী হচ্ছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। তারা বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে নতুন করে বিনিয়োগমুখী হওয়ার আজ লেনদেন পরিস্থিতি কিছুটা বাড়ছে। ফলে লেনদেনে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে পুঁজিবাজার। মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)প্রায় ৪ শত কোটি টাকার কাছাকাছি লেনদেন হয়েছে। তেমনি সূচকও কিছুটা বাড়ছে। এটা বাজারের জন্য ভাল লক্ষন বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

জানা গেছে, ঈদের ছুটির আগেও চাঙ্গা ছিল বাজার। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুন ক্লোজিংয়ের পর এখন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও বাজারে বিনিয়োগমুখী হয়ে উঠেছেন। সব মিলিয়ে নতুন করে গতি ফিরে পেয়েছে লেনদেন।

পুঁজিবাজারে ব্যাংকের এক্সপোজার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নমনীয় সিদ্ধান্তের ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধীরে ধীরে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। এর ধারবাহিকতায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বাজারমুখী হয়েছেন। বজারে তাদের ক্রয় কার্যক্রম প্রভাবে আজকে সূচক বেড়েছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি এক্সপোজার নমনীয়তার ফলে তাদের শেয়ার ক্রয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও মনে করছেন তারা।

একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারা শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকমকে জানিয়েছেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী আজ শেয়ার কেনার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন। বাজারের যে অবস্থা তাতে এখনই শেয়ার না কিনলে সব ব্যাংক একবারে সক্রিয় হলে বাজারে বর্তমান দরে শেয়ার পাওয়া সংকট হবে।

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয়তায় চাঙ্গা হয়ে উঠেছে পুঁজিবাজার। পুঁজিবাজার নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের নেয়া নমনীয় সিদ্ধান্তের ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধীরে ধীরে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। এরই ধারবাহিকতায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হয়েছেন। বাজারে তাদের ক্রয় কার্যক্রমের প্রভাবে আজকে সূচক ও লেনদেন বেড়েছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে আজ সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানে শেষ হয় লেনদেন। এদিন শুরুতে কিছুটা উত্থান পতন থাকলেও ৪০মিনিট পর ঘুরে দাঁড়ায় বাজার।

এর ফলে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো উর্ধ্বমুখী প্রবণতায় বিরাজ করছে সূচক। মঙ্গলবার সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশীরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। আর টাকার অংকে ডিএসইতে লেনদেনে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে ৪৪ শতাংশেরও বেশী।

dse-12-7দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪৫৪৪ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১১১৬ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৭৭২ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩২৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২০৩টির, কমেছে ৭১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৯টির। আর দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৩৯৪ কোটি ১১ লাখ ২২ হাজার টাকা।

এর আগের কার্যদিবস অর্থাৎ সোমবার ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৪৫০৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১১০৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ০.৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ১৭৫৮ পয়েন্টে।

আর ওইদিন লেনদেন হয়েছিল ২৭২ কোটি ৭৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১২১ কোটি ৩৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বা ৪৪.৪৯ শতাংশ। এদিকে দিনভর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক ৫৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮৪৭০ পয়েন্টে। দিনভর  লেনদেন হওয়া ২৫৩টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪২টির, কমেছে ৭১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪০টির।

tradeআর দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৯৮ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। এর আগে সোমবার সিএসইর সাধারণ সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮৪১৪ পয়েন্টে। ওইদিন মোট লেনদেন হয়েছিল ১৪ কোটি ৮৮ লাখ ৩ হাজার টাকা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা না আসলে বাজার স্থিতিশীল হবে না। তবে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ ১৯৯৬-এর শেয়ার ধসের পর পর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাজারে আসলেও দ্রুত লাভ করে বাজার ছাড়ার প্রবণতায় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

এ প্রসঙ্গে ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের মতো বাজারগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বল্প মেয়াদে মুনাফা করে চলে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তবে বাজারের স্থিতিশীলতার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাহলে লেনদেন আরো বাড়বে।