budget investশেয়ারবার্তা ডটকম, ঢাকা: বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজার জেগে উঠার আশার কথা শোনালেও হতাশা প্রকাশ করেছেন বিনিয়োগকারী সহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করে বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট বিনিয়োগকা্রীদের প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির কোন মিল নেই।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেন। দীর্ প্রায় ছয় বছর ধরে মন্দাবস্থায় রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। অর্থনীতিতে শেয়ারবাজারের অবদান বাড়ানোর অনেক চেষ্টা করা হলেও প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ।

নতুন বিনিয়োগকারী সৃষ্টির প্রক্রিয়ায় ধীরগতি নিয়েও অনেক হতাশা। অর্থনৈতিক উন্নয়নে পুঁজিবাজারকে কাজে লাগাতে প্রায় প্রতি বছরই বাজেটে এ-সংক্রান্ত কিছু ঘোষণা থাকে। তবে এবারের বাজেট প্রস্তাবনায় পুঁজিবাজার নিয়ে উল্লেখ করার মতো কিছুই দেখা যায়নি। অবশ্য ধস-পরবর্তী সংস্কার ও ফটকাবাজির অবসানের কারণে বাজার জেগে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য প্রায় সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, পুঁজিবাজার দেশের আর্থিক খাতের একটি স্তম্ভ হওয়ার জন্য প্রস্তুত। শেয়ারবাজারের আইনি সংস্কার ও ফটকাবাজির অবসানের কারণে বাজার জেগে উঠবে।

বাজেট নিয়ে ডিএসইর জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ রশীদ লালী এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বাজেটে তারা কিছুই পাননি। পুঁজিবাজারের এই অবস্থায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) কোনো চাহিদার প্রতিফলন এই বাজেটে হয়নি। বলা যায়, পুঁজিবাজারের জন্য এই বাজেটে কিছু নেই।” ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর পুঁজিবাজারের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে আরও তিন বছর শতভাগ কর অবকাশ সুবিধা চেয়ে আসছিল ডিএসই সিএসই।

আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মো. মুনিরুজ্জামান বলেন, “একটি ছোট বিষয় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য দেওয়া হয়েছে। তবে তার কোনো প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়বে বলে মনে হয় না।”

বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট প্রণোদনা বা প্রস্তাবনা আসেনি এবারের বাজেট বক্তৃতায়। নিজ নিজ খাতে কর-মূসক হ্রাসের সুবিধা পেতে পারে তৈরি পোশাকসহ কিছু তালিকাভুক্ত কোম্পানি। কিন্তু তালিকাভুক্ত হওয়ার কারণে তারা বাজেট থেকে কিছু পাচ্ছে না।

তৈরি পোশাক খাতে করপোরেট করহার ৩৫ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে নিয়ে আসার পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত মার্জিন ঋণ ও সুদ সুবিধার করযোগ্যতা থেকে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের অব্যাহতি ঘোষণা করা হয়েছে বাজেট বক্তৃতায়। কিন্তু সরাসরি শেয়ারবাজার-সংক্রান্ত কোনো প্রস্তাবনা নেই। ফলে বাজেটে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন বাজার-সংশ্লিষ্টরা।

বাজেট প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে বাজেটে আমরা বেশকিছু প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। শেয়ারবাজারের উন্নয়ন ও বাজারকে এগিয়ে নিতে বাজেটে কোনো দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়নি।

পুঁজিবাজারের মার্জিন ঋণের সুদ মওকুফ হলে তাকে মুনাফা হিসেবে ধরা হত, এখন এই সুবিধা থেকে প্রাপ্ত অর্থ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত কর মুক্ত রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।  বাজেট বক্তৃতায় মুহিত পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এর আগে নেওয়া পদেক্ষপের ফিরিস্তি দিয়ে বলেছেন, “গত কয়েক বছরে পুঁজিবাজারে আইন-কানুনের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে।