rokibur rahmanসম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন মো. রকিবুর রহমান। তিনি এর আগে একাধিকবার এই প্রতিষ্ঠানের প্রেডিডেন্ট ছিলেন। পুঁজিবাজারের বর্তমান অতীত এবং ভবিষ্যত নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয় শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকমের বিশেষ প্রতিনিধি সাথে। পাঠকদের জন্য তার বিশেষ অংশ প্রকাশ করা হলো।

শেয়ারবার্তা : ডিএসইর পরিচালক মনোনিত হওয়ায় আপনাকে শেয়ারবার্তা পরিবারের পক্ষ থেকে অভিনন্দন। কেমন আছেন ?

রকিবুর রহামান : জি আল্লাহ ভালো রেখেছেন। আমার পক্ষ থেকেও আপনি এবং শেয়ারবার্তার সকলের জন্য শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা।

শেয়ারবার্তা : আপনি ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পাচ্ছেন। দায়িত্ব পেয়ে আপনার পক্ষ থেকে পুঁজিবাজারের জন্য কী করণীয় থাকবে ?

রকিবুর রহমান : কী করণীয় থাকবে এটা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে আমার প্রধান দায়িত্ব থাকবে বিনিয়োগকারীদের পাশে থাকা। তাদের স্বার্থ রক্ষা করা। আমাদের দেশের পুঁজিবাজারে ৩২ লাখের বেশি বিনিয়োগকারী রয়েছেন।

এদের মধ্যে অনেকের রুটি রুটির জায়গা এটা। তাই সবার সঙ্গে আলোচনা করে খুঁজে বের করবো ঠিক এই পরিস্থিতিতে তাদের জন্য কী করা দরকার। তারপর সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে। এটা আমার একার কাজ নয় সকলের প্রচেষ্টা।

শেয়ারবার্তা : বর্তমানে বাজার পরিস্থিতি বেশ নাজুক। এই পরিস্থিতিতে অনেকে মনে করছেন বাজারের অবস্থা আবার ২০১০ সালের মতো হবে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী ?

রকিবুর রহমান : বর্তমান বাজারের অবস্থা কিছুটা নাজুক এ কথা সত্যি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে বাজারে ২০১০ সালের পরিস্থিতি ফিরে আসবে। একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না।

সেই সময়ের বাজারের সঙ্গে বর্তমান বাজারের কোনো মিল নেই। সেই সময় বাজারে শেয়ার সংকট ছিলো, ছিলো অতিমূল্যায়িত শেয়ারের ছড়াছড়ি। এখন এসব নেই। বরং বর্তমানে বেশিরভাগ শেয়ারের দর রয়েছে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে। ফলে যারা ২০১০ এ ফিরে যাওয়ার মনোভাব পোষণ করছেন তাদের সঙ্গে আমি একমত নই।

শেয়ারবার্তা : আমাদের দেশের বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী অন্যের কথায় কিংবা গুজবের বশে শেয়ার ক্রয় বিক্রয় করেন। যার ফল সব সময় শুভ হয় না। এইসব বিনিয়োগকারীদের আসলে কী করা উচিত?

রকিবুর রহমান : আমি একটা কথা বহুবার বলেছি। তা হচ্ছে শেয়ার বাজারে আসতে হবে জেনে বুঝে। আর শেয়ার ক্রয় বিক্রয় করতে হবে ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানির। এই জন্য দরকার প্রতিটি কোম্পানি সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখা। সেই সঙ্গে এসব কোম্পানির মালিক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া।

যারা এসব না বুঝে শেয়ারবাজারে আসেন তারা বড় ধরনের ভূল করেন। তাদের মনে রাখা উচিত কখনো অন্যের কথায় কিংবা হুজগে গুজবে শেয়ার ক্রয় বিক্রয় করা ঠিক নয়। এতে লাভবান হওয়ার চেয়ে লোকসান হওয়ার শঙ্কা বেশি থাকে। একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না, যার পুঁজি তাকেই নিরাপদে রাখতে হবে।

শেয়ারবার্তা : দীর্ঘদিন থেকে ওটিসিতে (অভার দ্যা কাউন্টার) থাকা কোম্পানির শেয়ার নিয়ে ভোগান্তিতে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এসব বিনিয়োগকারীদের ভোগান্তি নিরসনে আপনার কিছু  করণীয় থাকবে কি না ?

রকিবুর রহমান : আমার জানামতে ওটিসির কোম্পানি নিয়ে বিএস্ইসি  কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। ইতোমধ্যে কিছু কোম্পানির শেয়ার মাঝে মধ্যে লেনদেন হচ্ছে। সবগুলো কোম্পানির শেয়ার যাতে সহজে লেনদেনযোগ্য হয় সে বিষয়ে আমরা সবাই মিলে কাজ করবো। আশা করছি বিনিয়োগকারীদের এই অবস্থার নিরসন হবে।

শেয়ারবার্তা : সম্প্রতি বাজারে লেনদেন আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা যাচ্ছে। তাদের উদ্দেশে কী বলবেন?

রকিবুর রহমান :  পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি। বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়। ধৈর্য্য ধরুন। শেয়ারবাজারে এমন পরিস্থিতি আসা অস্বাভাবিক কিছু নয়।