শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারের টানা দরপতনে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা। দিন যতই যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা ততই ভারী হচ্ছে। চরম সংকটে দেশের পুঁজিবাজার। নিয়ন্ত্রক সংস্থার সিদ্ধান্তহীনতা এবং ঘন ঘন নীতির বদলে আস্থার সংকটে বিনিয়োগকারীরা। ডিএসই এবং বিএসইসি দুই কর্তৃপক্ষের পরস্পরবিরাধী সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়ছে বাজারে। যার ফলে এক মাস ধরে চলছে দরপতন।

দৈনিক লেনদেন নেমেছে ৪ ভাগের এক ভাগে। টানা পতনে অসহায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। শেয়ার বিক্রি করে বাজার ছাড়ছেন অনেকে। এমন পতনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্যসূচক গত ৩৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থায় নেমে গেছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশনের ৪ বছরের জন্য নিয়োগের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামি মে মাসে। তাদের মেয়াদের শেষ দিকে এসে পুঁজিবাজার টানা পতনে রয়েছে। এতে কমিশনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের ক্ষোভ বাড়ছে।

করোনা মহামারির কারনে পুঁজিবাজারে যখন ধস ঠেকানো যাচ্ছিল না, তখন শিবলী কমিশনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। যারা দক্ষতার সঙ্গে সেই সময়ের সংকটকালীন সময় অতিক্রম করে। তবে পরে ভালোর সঙ্গে কিছু নেতিবাচক কাজ করার অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে। যা তাদেরকে বিতর্কিত করেছে এবং বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা সংকট বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই’র প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ৬.০৬ পয়েন্ট বা ০.১ শতাংশ কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৯৬৮ পয়েন্টে।যা প্রায় বিগত ৩৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। এর আগে ২০২১ সালের ২৫ মে ডিএসইর সূচক দাঁড়িয়েছিল ৫ হাজার ৮৮৪ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ১.০২ পয়েন্ট ০.০৭ শতাংশ কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৯৯.৮ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৪.৯৮ পয়েন্ট ০.২৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫১.৫৮ পয়েন্টে।

বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ৫১৪ কোটি ৬৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আজ ডিএসইতে আগের কার্যদিবসের ব্যবধানে ৩১ কোটি ৩৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা কম শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গত বুধবার ডিএসইতে ৪৮৩ কোটি ৩০ লাখ ৩৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ডিএসইতে মোট ৩৯৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৫টির, কমেছে ১৭১টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৮টির।

অপর পুঁজিবাজার সিএসইর প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ৯.২৪ পয়েন্ট বা ০.০৯শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ২৬১.৮৯ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৫.০৭ পয়েন্ট বা ০.০৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ০৯০.৩৭ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ২.১২ পয়েন্ট বা ০.১৯ শতাংশ কমে ১ হাজার ১০৮.৫ পয়েন্টে এবং সিএসই৩০ সূচক ৩৬.৭৮ পয়েন্ট বা ০.২৮ শতাংশ কমে ১২ হাজার ৮১১.৯৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

আজ সিএসইতে ২১২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৫টির, কমেছে ৮৯টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির। দিন শেষে সিএসইতে ১৩ কোটি ৯৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১১ কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার।